কারাগারে কী কী সুবিধা পাচ্ছেন পলক?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮ PM
ঐতিহাসিক ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। তারপর হাসিনা সরকারের বহু সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য (এমপি) গ্রেপ্তার হয়ে ঠাঁই পেয়েছেন কারাগারে। তাদেরই একজন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কারাগারে বাড়তি কিছু সুবিধা পাচ্ছেন। এ ছাড়াও ডিভিশন অনুযায়ী কারা আইনে যা যা পাওয়ার কথা সেগুলোও ভোগ করছেন তিনি। এক সেলে থাকছেন একাই, রয়েছে সেবার জন্য একজন বন্দিও। এ ছাড়া খাট, চেয়ার-টেবিল, পত্রিকা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কারা সুবিধা পেয়ে থাকেন তিনি।
সম্প্রতি সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী এবং তার আইনজীবী আদালতে শুনানিকালে ডিভিশন অনুযায়ী কারাগারে সংশ্লিষ্ট সব সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। এ ছাড়া কারাগারে পলককে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া কয়েদিদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়। তবে পলক ও তার আইনজীবীর অভিযোগ নাকচ করে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ডিভিশন অনুযায়ী একজন বন্দির যে-সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তার সবই পাচ্ছেন পলক।
গত ২ ডিসেম্বর আদালতে শুনানিকালে পলক বলেছিলেন, তিনি কোনো ডিভিশন সুবিধা পাচ্ছেন না। দুই হাজার আসামির সঙ্গে কারাগারে রাখা হয়েছে তাকে। যার মধ্যে দেড় হাজারজনই ফাঁসির আসামি। তবে পলকের এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী হাইসিকিউরিটি কারাগারে রয়েছেন, সেখানে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে তিনি ডিভিশন পেয়েছেন। তাই যে কারাগারেই থাকেন না কেন, ডিভিশন অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুবিধা পাবেন। কারা আইন অনুযায়ী যে যে সুবিধা পাওয়ার কথা, তাকে তার সবই দেওয়া হচ্ছে।
কারা কর্মকর্তারা বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী কারাগারে শ্রেণি (ডিভিশন) সুবিধা পেয়ে থাকেন সাবেক এমপি, মন্ত্রী, সিআইপি ও সরকারি কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ডিভিশন সুবিধার জন্য যেকোনো বন্দি নিজের সামাজিক অবস্থান তুলে ধরে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আদালত যদি কোনো বন্দির ডিভিশন সুবিধার আবেদন মঞ্জুর করে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় তখন সেই বন্দি ডিভিশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। যারা ডিভিশন পেয়ে থাকেন তাদের আলাদা কক্ষ বা সেলে রাখা হয়। সেখানে খাট, ভালো বিছানা, টেবিল, চেয়ারসহ বাড়তি কিছু সুবিধা দেওয়া হয়। তাদের খাবারের পদেও রয়েছে সাধারণ বন্দির চেয়ে কিছুটা ভিন্নতা। ডিভিশন পাওয়া বন্দিদের জন্য একজন করে সহকারী (বন্দিদের মধ্যে থেকে) দেওয়া হয়। তারা সংশ্লিষ্ট বন্দির প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে দেন। এ ছাড়া কারাগারের বাইরে থেকে স্বজনদের দেওয়া খাবার যাচাই-বাছাই করে তাদের দিয়ে থাকে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারাগারে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ডিভিশনের বিষয় জানতে চাইলে সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (এআইজি-উন্নয়ন) মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, ‘যারা ডিভিশন পান তাদের আলাদা রুম বা সেলে রাখা হয়। সেখানে থাকে খাট, ভালো বিছানা, টেবিল, চেয়ার, তোশক, বালিশ, তেল, চিরুনি, আয়নাসহ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস। সাবেক এ প্রতিমন্ত্রীও যেহেতু ডিভিশন পেয়েছেন, তাই তিনিও সংশ্লিষ্ট সব সুবিধা পেয়ে থাকেন। ডিভিশন পাওয়া বন্দিদের জন্য একজন করে সহকারী দেওয়া হয়। তারা সংশ্লিষ্ট বন্দির প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে দেন। সেই সুবিধাও পাচ্ছেন পলক।’