শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন
অভিভাবকদের মানুষ বলেই গ্রাহ্য করে না ভিকারুননিসা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:০৯ PM , আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:০৪ PM
‘ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের মানুষ বলেই গ্রাহ্য করেন না।’ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে স্কুলটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণের কারণেই অরিত্রী ট্রাজেডি সংঘটিত হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, ‘গভর্নিং বডির সভাপতিকে না জানিয়ে স্কুল পরিদর্শন করায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সমালোচনা করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার।’
এ বিষয়টিকে চরম দাম্ভিকতার পরিচায়ক উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সভাপতির এহেন আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। এতে প্রতীয়মান হয়- স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী সম্পর্কে গভর্নিং বডির এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া পোষণ করলে, সাধারণ অভিভাবকদের তারা মানুষই বলেই গ্রাহ্য করেন না। প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি বিরাজমান আছে বলেই অরিত্রী ট্রাজেডি সংঘটিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গভর্নিং বডি ভেঙ্গে দেয়া প্রয়োজন বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ ডিসেম্বর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার পরদিন ৪ ডিসেম্বর সকালে তাৎক্ষণিক ভাবে ভিকারুননিসা নূন স্কুল পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি স্কুলের অধ্যক্ষ, উপস্থিত শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রীদের সাথে কথা বলেন।
পরে আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।কমিটির প্রধান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ।অপর দুই সদস্য হলেন, ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক সাখায়েত হোসেন বিশ্বাস ও ঢাকার জেলা শিক্ষা অফিসার মো: বেনজীর আহমদ।
তদন্ত কমিটি ‘ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার, অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) নাজনীন ফেরদৌস, শিফট ইনচার্জ জিনাত আখতার, পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্ব পালনকারী কক্ষ পরিদর্শক লুৎফুন নাহার করিম ও আফসানা আমাতু রাব্বি, গভর্নিং বডির সদস্য ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও অভিভাবক রিপন তরফদারের বক্তব্য গ্রহণ করেন।
এছাড়া যে কক্ষে অরিত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল সেই কক্ষের অন্যান্য সহপাঠীদেরও বক্তব্য নেয়া হয়। শান্তিনগরের বাসায় গিয়ে অরিত্রীর বাবা দিলীপ কুমার অধিকারী সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। গত ৪ ডিসেম্বর কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে তা ৫ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে জমা দেন।