অধ্যক্ষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার রহস্যজনক মৃত্যু
দিনাজপুরে এক কলেজ অধ্যক্ষের ঘরের সেলিং ফ্যানে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় এক গৃহপরিচারিকার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের অভিভাবকের দাবি- তার মৃত্যু রহস্যজনক। শুক্রবার সকালে ওই গৃহপরিচারিকার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে দাফন করতে গেলে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসীরা বাধা দেয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন হয়। চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন জানান, রহস্যজনক মৃত্যু হওয়ায় ওই কিশোরীর অভিভাবক মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নিহত গৃহপরিচারিকা রোখশানার বাড়ি নীলফামারী জেলা সদরের ১ নং চোওড়া ইউপির আরাজী দলুয়া পাড়ায়। রিকশাচালক রফিকুল ইসলামের মেয়ে। অভিভাবকের দাবি রোখশানার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ জানায়, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খয়রুল ইসলাম চৌধুরীর দিনাজপুর শহরের সুইহারী এলাকার বাড়ির কিশোরী গৃহপরিচারিকা রোখশানার লাশ সকাল ১০টায় উদ্ধার করে পুলিশ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেদওয়ানুল রহিম জানান, বাড়ির একটি ঘরের সেলিং ফ্যানে গলায় ওরনা প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোরী গৃহপরিচারিকা রোখশানা। গৃহকর্তা অবগত করলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাতে অভিভাবকেরর কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
রফিকুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষ খয়রুল ইসলাম চৌধরীর বাড়ি থেকে মোবাইলফোনে বৃহস্পতিবার বিকালে জানানো হয়, রোখশানা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই খবর পেয়ে তার ছোট মা (বিমাতা) জবেদা দিনাজপুরে গিয়ে জানতে পারে তার মেয়ে মারা গেছে। পরে রাত ৯টায় লাশ নিয়ে নীলফামারীর বাড়িতে ফিরে। রোখশানার মা রহিমা মেয়ের মৃত্যুতে আহাজারি করছেন। বলছেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত রোখশানার এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে।
হত্যাকারীদের বিচারের দাবি করে সকালে তারা লাশ দাফনে বাধা দেয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত এলাকাবাসীকে প্রসমিত করেন। তার উপস্থিতিতে লাশ দাফন সম্পন্ন করেন তিনি। মৃত রোখশানার পরিবারকে আশ্বাস দেন এ ব্যাপারে মামলা করার।
এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খয়রুল ইসলাম চৌধুরী সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘনিষ্টজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি গ্রামের বাড়ি বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচার চৌধুরী পাড়ায় গিয়েছেন। গৃহপরিচারিকা রোখশানা আত্মহত্যা করার সময় অধ্যক্ষ খয়রুল ইসলাম চৌধুরী কলেজে ছিলেন। তার স্ত্রী ছিলেন, তার কর্মস্থল মাদরাসায়। বাড়িতে এ সময়ে তার এক মেয়ে ছিল। ছোট মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দেয়ার পর বাড়িতে এসে দরজা লাগিয়ে ঘরে আত্মহত্যা করেছে রোখশানা। এক মাসে আগে রোখশানা ওই বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয়।