শিক্ষার্থী হত্যা : কর্মচারীদের ভয় দেখিয়ে বডি ম্যাসাজ নেয়া অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে দায়ের হাওয়া মামলায় উত্তরার নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহীনুর রহমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তার বিরুদ্ধে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে বডি ম্যাসাজ নেয়ার অভিযোগ ছিল। তিনি অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ আছে।
গতকাল রবিবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১।
এ বিষয়ে র্যাব-১ এর সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিফ বিন হালিম গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে করা মামলার আসামি নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহীনুর রহমান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ শাহীনুর মিয়ার বিরুদ্ধে গত ১৮ জুলাই এক ছাত্রকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। উত্তরা পূর্ব থানায় গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা হয়েছে।
মেজর আহনাফ আরও বলেন, ওই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শাহীনুর রহমান মিয়া হামলাকারীদের নির্দেশদাতার ভূমিকা ছিলেন। আবার হামলাকারীদের হামলায় যখন শিক্ষার্থীরা আহত হয়ে নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে আশ্রয়ের জন্য ঢুকতে চেয়েছিল, তখন শাহীনুর রহমান শিক্ষার্থীদের ঢুকতে দেননি।
কলেজের শিক্ষকদের অভিযোগ, কলেজের দুটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে দীর্ঘদিন বসবাস করেছেন অধ্যক্ষ শাহীনুর রহমান। পাঁচ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে অবৈধভাবে বাড়িভাড়াও নিয়েছেন তিনি। একসময় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আপত্তির মুখে বেতনের সঙ্গে বাড়িভাড়া নেয়া বন্ধ করলেও ‘ভুয়া ভাউচার’ তৈরি করে ঠিকই তুলে নিয়েছেন সমপরিমান টাকা। তার বাসার ইউটিলিটি বিল পুরোটাই বহন করেছে কলেজ। সব কাজের কাজি ওই অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের দিয়ে বডি ম্যাসাজও করিয়ে নেন।
শিক্ষকরা বলছেন, চাকরি থেকে বাদ দেয়ার ভয় দেখিয়ে বেলাল নামে প্রতিষ্ঠানের এক গার্ডকে দিয়ে বডি ম্যাসাজ করাতেন অধ্যক্ষ। কর্মচারীরা অধ্যক্ষের বাসার কাঁচা বাজার, জামা কাপড় ধোয়া, রান্না ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও করতেন।
অধ্যক্ষ পদে মো. শাহিনুর মিয়ার বহাল থাকা অবৈধ বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা। তারা বলেন, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানটি কলেজ শাখায় পাঠদানের অনুমোদন পায়। কিন্তু এর চার মাস আগেই অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ডিজির প্রতিনিধি না থাকায় তার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছিলো। পরে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেখান।