পূজামণ্ডপে ইসলামি গান পরিবেশন করা যুবকদের দুজন শিক্ষক
চট্টগ্রামের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের সাংস্কৃতিক মঞ্চে ইসলামি গান পরিবেশন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজন শিক্ষক। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর রহমতগঞ্জের জেএম সেন হলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। সংগঠনটির সদস্যরা শাহ আবদুল করিমের বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’ গানটির খণ্ডাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার জের ধরে রাতে জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে বিক্ষোভ করেন কয়েকশো হিন্দু ধর্মাবলম্বী। রাত প্রায় দুইটা পর্যন্ত জেএম সেন হলের পূজা মণ্ডপের বাইরে চলে এই বিক্ষোভ। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি মঞ্চে গান পরিবেশন করে। সংগঠনটিকে জামায়াতে ইসলামি ও ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করছেন অনেকে। তবে তারা এই ঘটনায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছে এবং তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
এ ঘটনার জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন, চট্টগ্রামের তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক শহীদুল করিম ও দারুল ইরফান একাডেমির শিক্ষক নুরুল ইসলাম। শিক্ষকতার পাশাপাশি তারা চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
আরও পড়ুন: পূজামণ্ডপে ইসলামি গান গেয়ে গ্রেপ্তার ২
সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রইছ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সময় ওই সংগঠনের সদস্য শহীদুল করিম, মো. নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা ও মো. মামুন পূজার অনুষ্ঠানে আসেন এবং একটি ইসলামিক গজল ও একটি বাউল গান পরিবেশ করেন।
পূজা উদ্যাপন কমিটি দাবি, কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের অনুমতি নিয়ে ঐ ছয় যুবক গান গাইতে মঞ্চে উঠেছিলেন। পরে সমালোচনার মুখে সজল দত্তকে পূজা উদ্যাপন কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর সজল দত্ত আত্মগোপনে রয়েছেন। তার সঙ্গে পুলিশ ও সাংবাদিক কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি।