২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০২

আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নিহত নুর আলম  © সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে নুর আলম (৬০) নামে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যা অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জে পাঁচপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। নিহত নুর আলম স্থানীয় পাঁচপাড়া এলাকার কালা মিয়ার ছেলে ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ৫ আগস্টের সরকার পতনের পর থেকে নিজের ব্যবসা বন্ধ করে বাড়িতে অবস্থান নেন। হঠাৎ করে রাত ৯টার দিকে ১৫ থেকে ২০জন দলবদ্ধ হয়ে নুর আলমের বাড়িতে হামলা চালায়। একপর্যায়ে পিটিয়ে নুর আলমকে গুরুতর আহত করে। এসময় বাধা দিতে গেলে স্ত্রী-সন্তানকে পিটিয়ে আহত করে তারা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় নুর আলমকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার বর্ণনায় নিহতের ছেলে আরিফ বলেন, “সন্ধ্যার পর আমার বাবা ঘরে ছিলেন। এ সময় তার মোবাইল ফোনে কে বা কারা কল করে জানায় যে, লোকজন তাকে মারতে আসছে। তখন তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়া মাত্রই বাড়ির পেছনে হামলাকারীরা তাকে আক্রমণ করে। তাকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি পুকুরে পড়ে যান। সেখান থেকে তুলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আমার বাবা তাদের বলেছিলেন, ‌‌আমাকে মেরো না, তুলে নিয়ে যাও। তারপরও তারা মেরে ফেলল।”

আরিফ বলেন, “ঘটনার সময় আমি ঘর থেকে বেরিয়ে বাবাকে মারতে দেখি। ওই সময় হামলাকারী দুইজন আমাকেও ধরে রেখেছিল। আমি তাদের হাত থেকে ছুটে পুকুরের অন্য পাড়ে গিয়ে আশ্রয় নিই। আমার মা মমতাজ বেগম হামলাকারীদের পায়ে ধরে ছিলেন, যাতে বাবাকে না মারে। কিন্তু কেউ কোনো কথা শোনেননি। আমার মাকেও মারধর করা হয়েছে। আমার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও কারো ক্ষতি করেননি। হামলার পর প্রথমে তাকে চন্দ্রগঞ্জের একটি হাসপাতালে, পরে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

আরও পড়ুন: ‘গান গেয়ে উল্লাস করে’ যুবককে পিটিয়ে হত্যা

আরিফ অভিযোগ করে বলেন, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খোকন নামের একজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন, যিনি হামলার নেতৃত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে আরও ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন। খোকন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার. ডা. জয়নাল আবেদিন গণমাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই নুর আলম মারা গেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরির্দশক(তদন্ত) মো. মফিজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে কারা জড়িত বা কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।