‘গান গেয়ে উল্লাস করে’ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
চট্টগ্রামে দলবদ্ধভাবে ‘গান গেয়ে গেয়ে, উল্লাস করে’ এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছে। ওই যুবকের নাম শাহাদাত হোসেন। খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে পিটিয়ে মারার একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, এক দল যুবক ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’ গানটি গেয়ে রীতিমতো উল্লাস করতে করতে খুঁটির সঙ্গে এক যুবককে বেঁধে পেটাচ্ছে। পরে ওই যুবকের মরদেহ রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গত ১৩ আগস্ট রাতে এই ঘটনা ঘটলেও শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ভিডিওটি ভাইরাল হলে চট্টগ্রামজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। খুঁটির সঙ্গে বেঁধে গান গেয়ে গেয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ২০ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি দেখে স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, এটি তার স্বামীকে মারারই দৃশ্য।
জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট রাতে চট্টগ্রামে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন দুই নম্বর গেট আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর দিন ১৪ আগস্ট ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার দূরে প্রবর্তক মোড় থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধারের পর তা শনাক্ত করা হয়। নিহত যুবক নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ির নুর মোহাম্মদের ছেলে শাহাদাত হোসেন।
চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন বিআরটিসি এলাকায় থাকতেন তিনি। চাকরি করতেন স্টেশন রোডে অবস্থিত ফলমন্ডির একটি দোকানে। হত্যার ভিডিওটি দেখে স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, এটি তার স্বামীকে মারারই দৃশ্য। এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করেন তিনি।
এ ঘটনায় তার চাচা মোহাম্মদ হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৩ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে যান শাহাদাত। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তার স্ত্রীর শারমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় শাহাদাতের। তখন কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় ফিরে আসবেন বলে স্ত্রীকে জানান। কিন্তু মধ্যরাত পর্যন্ত বাসায় ফেরেননি। এতে তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তখন তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকের মাধ্যমে নিহতের চাচা হারুন জানতে পারেন প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজা শাহাদাত হোসেনের লাশ পড়ে আছে। ওই রাতেই পুলিশের সাহায্যে তিনি লাশটি উদ্ধার করেন। পরে লাশটি মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়েও এজাহারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী শারমিন আক্তার।
পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান রোববার রাতে বলেন, ‘খুঁটির সঙ্গে বেঁধে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী সেটি দেখে নিশ্চিত করেন যে, মারধরের শিকার ব্যক্তিটিই তার স্বামী।’