শ্রেণিকক্ষে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি নিশ্চিত হলে কিশোর গ্যাং কমবে: সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে কিশোর গ্যাংসহ সমাজে নানা অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। আজ সোমবার (১ জুলাই) সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত সরকারি দলের সদস্য এম, আবদুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, সারাদেশে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে কিশোর গ্যাংসহ সমাজে নানা অপরাধ কমে আসবে- এটি বাস্তবতা এবং সত্য কথা। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা সুনাগরিক হিসেবে মানুষকে গড়ে তোলে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকলে বিভিন্ন অপরাধমূলক ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকবে এবং মনোজগতের উন্নত বিকাশ ঘটবে। ফলশ্রুতিতে কিশোর গ্যাংসহ সমাজে নানা অপরাধ কমে আসবে।
তিনি জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিতকল্পে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত উপস্থিতির উপর নির্দিষ্ট নম্বর প্রদান, পরপর কয়েকদিন অনুপস্থিত থাকলে জরিমানাসহ বিদ্যালয় পরিত্যাগ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়মিত পরিদর্শন করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম যেমন- খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি নিয়মিত আয়োজন করা হয়ে থাকে।
“অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তাদের অভিভাবকদের অবগত করা এবং সময় সময় অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বছরের প্রথমে শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম যেমন-খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি নিয়মিত আয়োজন করা হয়ে থাকে, প্রতিবছর 'জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ' উদ্যাপন এবং প্রাথমিক শিক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ করা হয়। এসব পদক্ষেপ গ্রহণের ফলস্বরূপ শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থেকে শিখন-শিখানো কার্যক্রমে মনোযোগী ও ব্যস্ত থাকছে।”
কিশোর গ্যাংসহ সমাজে নানা অপরাধ নিবারণের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিপথগামী কিশোরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য জেলা, উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। বিপথগামী কিশোরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিশোর গ্যাং সদস্যদের পাশাপাশি পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে জেলার সকল স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সিসিটিভির আওতায় আনার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে কিশোর গ্যাং ভিত্তিক অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।