জানা গেল এক পুলিশকে আরেক পুলিশের গুলির কারণ
রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনের শনিবার রাতে কর্তব্যরত এক পুলিশ কনস্টেবলের গুলিতে অপর এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। সেসময় কনস্টেবলের গুলিতে জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ সূত্র জানায়, কাওছার ও মনিরুল একসঙ্গে ফিলিস্তিন দূতাবাসে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাইরে দাঁড়িয়ে কে কতক্ষণ দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে মনিরুলকে এলোপাতাড়ি গুলি করেন কাওছার।
এ ঘটনায় পথচারী জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত মনিরুলের ভাই পুলিশ কনস্টেবল মাহাবুবুল হক বাদী হয়ে রবিবার গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় আসামি কাওছারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মনিরুল ও কাওছার ফিলিস্তিন দূতাবাসের কাউন্টারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী একজন ছিলেন কক্ষের ভেতরে। আরেকজন বাইরে। কাওছার চাকরিতে মনিরুলের চেয়ে জ্যেষ্ঠ ছিলেন। তিনি চাইতেন মনিরুল তাকে সম্মান করুক। কিছুটা বেশি সময় বাইরে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করুক। কিন্তু মনিরুল সেই কথা শুনতেন না। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরুলকে গুলি করেন কাওছার।
ঘটনাস্থলে মনিরুলকে গুলির ঘটনার ১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। এতে দেখা গেছে, সময় শনিবার রাত ১১টা ৩৯ মিনিট। কনস্টেবল মনিরুল ডিউটি নোটবুক নিয়ে দূতাবাসের সামনে পায়চারী করছেন। কাউসারের দিকে নোটবুকটি নিয়ে এগিয়ে গেলে কাউসার গুলি করেন মনিরুলকে।
গুলিবিদ্ধ মনিরুল ফুটপাত থেকে সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় পড়ে যান। এরপর কাওসার তার কাছে এসে আরও গুলি চালান। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গুলিবিদ্ধ মনিরুলের শরীর স্থবির হয়ে গেলে, কাউসার মনিরুলের বন্দুকটি নিয়ে কাছাকাছি ঘোরাফেরা করতে থাকেন। সেসময় ঘটনাস্থলেই মনিরুল মারা যান।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কাওছারের সঙ্গে থাকা অস্ত্রটি গুলিভর্তি ছিল। শুরু থেকেই তিনি অস্ত্রটির ‘ট্রিগার’ ধরে ছিলেন। এতে অনেকগুলো গুলি লাগে মনিরুলের বাঁ চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে। কাওছারের কাছ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেছেন, ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে গুলিতে নিহত কনস্টেবল মনিরুল হকের সঙ্গে অভিযুক্ত কনস্টেবল কাওছার আহমেদের তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। তর্কাতর্কির পর উত্তেজিত হয়ে কনস্টেবল কাওছার সহকর্মী মনিরুলকে গুলি করে।