ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ে কলেজছাত্রীকে বিয়ে, ডিভোর্স দেওয়ায় অন্তরঙ্গ ভিডিও প্রকাশ
বেসরকারি জাহাজের খালাসী হিসেবে কর্মরত মো. আবুল কালাম শেখ নিজেকে জাহাজের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিদেশে থাকাকালে ইংরেজিতে কথাবার্তা বলে মুগ্ধ করে দেশে ফিরে নিজের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য গোপন করে এই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করেন।
পরবর্তীতে প্রথম স্ত্রী সন্তানের কথা বলে তাদের সঙ্গে একত্রে ঘর-সংসার করার জন্য বলে। রাজি না হাওয়ায় ভুক্তভোগীকে মারধর করাসহ নানাভাবে নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ডিভোর্স দিলে আসামি আবুল কালাম শেখ তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেন। পরে ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তে নেমে প্রতারক আবুল কালামকে মোংলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা আজাদ রহমান।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার আরাজি মাকরঢোন গ্রামের মো. আব্দুস সালাম শেখের ছেলে আবুল কালাম শেখ। সমুদ্রগামী জাহাজে খালাসী হিসাবে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করতেন। তার দুই সন্তান ও স্ত্রী থাকার পরও ফেসবুকে কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মামলার বাদীকে বিয়ে করে খুলনা শহরে বাসা ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে নিজের স্ত্রী-সন্তান থাকার কথা স্বীকার করে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে সংসার করার জন্যে দ্বিতীয় স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী তার কথায় রাজি না হলে আসামি তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে আসামিকে ডিভোর্স দিয়ে ঢাকায় এসে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেন। আসামি ভুক্তভোগীর বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে সে বাসায় এসে তাকে মারধর করে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী এতে রাজি না হলে আবুল কালামের কাছে থাকা দাম্পত্য জীবনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টিকটকে আপলোড করে ছড়িয়ে দেন।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে আদালতে অভিযোগ করেন। আদালত লালবাগ থানাকে মামলা রুজু করার আদেশ দেন এবং সিআইডিকে মামলার তদন্ত করার নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় জড়িত আবুল কালামকে মোংলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।