কোচিং সেন্টারে যৌন নিপীড়নের শিকার ৩০ শিশু, শিক্ষক আটক
- রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:০১ AM , আপডেট: ২০ মে ২০২৪, ০৮:২২ AM
রাজশাহীতে কোচিং সেন্টারে ৩০ শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ৩৩ বছরের এক শিক্ষক আব্দুল ওয়াকেলকে আটক করেছে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তার হওয়া মো. আব্দুল ওয়াকেল পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি রাজশাহীর কাটাখালী আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। নিজের কোচিং সেন্টারে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন তিনি।
রবিবার (১৯ মে) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার রাজশাহীর মতিহার এলাকার শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল ওয়াকেলকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
অভিযুক্ত ওয়াকেল রাজশাহী শহরের ১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন স্কুলছাত্রকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজশাহী শহরের ১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন স্কুলছাত্রকে যৌন নিপীড়ন করেছেন আব্দুল ওয়াকেল (৩৩)। যৌন নিপীড়নের ভিডিও মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক ও পেনড্রাইভে সংরক্ষণ করতেন তিনি। এসব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুকসহ বেশ কিছু সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি)-কে শিশু নিপীড়নকারীর ব্যাপারে তথ্য সরবরাহ করে। এনসিএমইসি পরে বাংলাদেশে সিআইডিকে সেই তথ্য দেয়। এর ভিত্তিতেই রাজশাহী নগরীর ডাঁশমারী এলাকা থেকে আব্দুল ওয়াকেলকে আটক করে।
ভুক্তভোগী অনেক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক আব্দুল ওয়াকেলের শিশু নিপীড়ন সম্পর্কে লোমহর্ষক তথ্য দিয়েছে বলে সিআইডির পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে।
ওয়াকেল ছাত্রাবস্থায় এলাকায় একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। এই সময় থেকেই ছাত্রদের টার্গেট করে চকলেট এবং মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। অনেক সময় তিনি টার্গেট করা ছাত্রদের হাতে পাবজি গেম ডাউনলোড করা মোবাইল ফোন হাতে দিয়ে পাবজি গেম খেলতে বলতো। বাচ্চারা তখন জনপ্রিয় পাবজি গেম খেলা নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকতো।
এই সুযোগে তাদের সাথে অপ্রাকৃতিক যৌনলালসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে সে শিশু বাচ্চাদের প্যান্ট খুলে ফেলতো এবং বিকৃত যৌনাচার করত। অনেক সময় কোচিং সেন্টারে অথবা নিজ বাড়িতে নিয়ে নানা কৌশলে যৌন নিপীড়ন করতেন। সেসব দৃশ্য আগে থেকে সেট করা রাখা মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করতেন। যৌন নিপীড়নের শিকার সব শিশুই তার ছাত্র ছিল।
আজাদ রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াকেল শিশুদের যৌন নিপীড়নের কথা স্বীকার করেছে। তার ভষ্যমতে এ পর্যন্ত ৩০ জন স্কুল ছাত্রকে বলৎকার করেছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ এবং কম্পিউটারের একাধিক হার্ডডিস্কে স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি ছাত্রদের বিপুল পরিমান নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির কন্টেন্ট পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত মো. আব্দুল ওয়াকেলের বিরুদ্ধে আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিজে বাদী হয়ে ঢাকার পল্টন মডেল থানায় পেনাল কোড এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।