নিখোঁজের ২৬ দিন পর নদীতে মিলল ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ
গত ২৯ মার্চ কিশোরগঞ্জে তারাবির নামাজ পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়ার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত নরসুন্দা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়া কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের কেওয়ারজুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তিনি একই ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া জেলা জজ আদালতের একজন পেশকারের সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
নিহত মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়ার বড় ভাই আশরাফ আলী বলেন, গত ৩ মাস ধরে মোখলেছ কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া বউ বাজার এলাকার চুন্নু মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতো। গত ২৯ মার্চ ভাড়া বাসা থেকে রাতে তারাবির নামাজ পড়তে বের হয়ে নিখোঁজ হয় তিনি। এরপর থেকেই আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি। সর্বশেষ অবস্থান রাস্তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে মাধ্যমে শনাক্ত হয়। ফুটেজে তার সঙ্গে কয়েকজনকে দেখা যায়। আমাদের ধারনা তারাই তাকে অপহরণ করে মেরে ফেলেছে।
এর আগে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের ব্যবহৃত লুঙ্গি, ভাড়া বাসার চাবি ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ মিঠামইনের কেওয়ারজুর ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের শেফুল শেখ (৬৫), তার তিন ছেলে মিজান শেখ (২৮), মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখকে (২১) হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আটক করে।
আটকের পর তারা জানান- ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিনকে তারা হত্যা করে নরসুন্দা নদীতে ফেলে দিয়েছেন। এরপরই সোমবার মরদেহ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার থেকে উদ্ধার অভিযান চলছিল। মঙ্গলবার বিকেলে নরসুন্দা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।