০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২২

কিশোরীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

কিশোরীকে কাজ দেওয়ার প্রলোভনে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকায় আব্দুস সালাম (৪০) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৯ সিলেটের অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. মোমিনুল হক এ তথ্য জানান।

মমিনুল হক বলেন, কিশোরীকে গণধর্ষণের পর গা ঢাকা দেন আব্দুস সালাম। পরবর্তীতে কোতোয়ালি মডেল থানায় ভিকটিমের মা মামলা করলে ছায়া তদন্তে নেমে গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় র‍্যাবের বিশেষ টিম। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে শিকলে বেঁধে তরুণীকে ২৫ দিন ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণ

তিনি বলেন, কিশোরী গণধর্ষণে জড়িত অপর আসামিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।  

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির এক কিশোরীকে ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২২ দিন আটকে রেখে গণধর্ষণ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালাম ও তার সহযোগীরা। তাদের সহযোগিতা করেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম। তিনি ফুসলিয়ে কিশোরীকে আব্দুস সালামের হাতে তুলে দেন। আব্দুস সালাম তার বাসায় আটকে রেখে সহযোগীদের নিয়ে টানা ২২ দিন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন।পরে মেয়েটি মুক্ত হলেও কয়েকদিন পর ফের আব্দুস সালাম তাকে তুলে নিয়ে আবদুল মনাফের সহযোগিতায় হবিগঞ্জে আটকে রাখেন। সেখানে আব্দুস সালাম, আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে ফের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। প্রায় দুই মাস নির্যাতনের পর গত ২৬ মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে বন্দি দশা থেকে মেয়েটি পালিয়ে আসে এবং তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মায়ের কাছে খুলে বলে। এ ঘটনায় গত ২৯ মার্চ কোতোয়ালি থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন মেয়েটির মা। 

গ্রেপ্তার ৪০ বছর বয়সী আবদুস সালাম নগরীর লালাদিঘির পার এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছিলেন। অন্য আসামিরা হলেন- সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ২৭ নম্বর বাসার ইশাদ মিয়ার ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিলেট মহানগর কমিটির সদস্য আবদুল মনাফ (৩৮) ও ধর্ষণের ঘটনার সহযোগী নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির রেখা বেগম (৩০)।

এর আগে রোববার সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠুর স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।

র‍্যাব জানায়, র‍্যাবের হাতে আটকের পর গণধর্ষণের বিষয়ে ব্যাপক তথ্য দিয়েছে আব্দুস সালাম। এভাবে চাকরির প্রলোভন দিয়ে অসংখ্য তরুণীর সর্বনাশ ঘটিয়েছে আব্দুস সালাম। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করতেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম। বর্তমানে রেখা ও মনাফ পলাতক রয়েছেন। আটক আব্দুস সালামকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।