কলেজছাত্র শান্ত হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা
বগুড়া শহরে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র আজহারুল ইসলাম শান্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। মানববন্ধনে শান্তর পরিবারের সদস্য, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। সোমবার জেলা শহরের সাতমাথা মোড়ে এ মানববন্ধ কর্মসূচির আয়োজন করে নিহত শান্তর পরিবার।
স্বজনদের সঙ্গে ছেলে হত্যার বিচার চাইতে মানববন্ধনে অংশ নেন শান্তর মা রাবেয়া খাতুন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘ছেলের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছেলে হত্যার বিচার চাইব, তা কখনো ভাবিনি। আল্লাহ, কেন এমন দিন আমাকে দেখতে হলো? আমার ছেলের মতো আর কারও সন্তানের যেন এমন পরিণতি না হয়। যারা আমার বুকের মানিকের জীবন কেড়ে নিয়েছে, তাদের ফাঁসি চাই।’
তিনি আরো বলেন, তার ছেলে নিরাপরাধ। সে বাসায় সামনে তার নিজস্ব অফিসে অবস্থান করাকালে চাঁদা নিতে আসে। আসামীরা চাঁদা না পেয়ে তাকে পরিচিত মেহেদীর মাধ্যমে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী ও এ পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়নি তাদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবি জানান তিনি। এঘটনায় নিহতের মা রাবেয়া খাতুন বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন।
শান্ত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তবা ও বগুড়া বনানী পুলিশ ফাড়ির এস আই আমিনুল ইসলাম জানান, কলেজ ছাত্র আজহারুল ইসলাম শান্ত হত্যা মামলার ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামী পলাতক রয়েছে। তারপরও বাকী আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি স্বপ্ল সময়ের মধ্যে বাকীদের গ্রেফতার করতে পারব।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নিহতের খালা রাশেদা বেগম, খালাতো বোন রাজিয়া সুলতানা, হাসিবুল ইসলাম প্রান্ত, আফিউল, আতিক হাসান, সোহান রহমান, শাহাদত, আবুল হোসেন, সৈকত, তাসিম, ইমরান ও সবিজ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের চকফরিদ কলোনি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত শান্তর পথরোধ করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় নিহতের মা রাবেয়া খাতুন ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৯ থেকে ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
আজহারুল ইসলাম শান্ত সারিয়াকান্দি উপজেলার কুপতারা সাহাপাড়া এলাকার আবুল হোসেন আলীর ছেলে। তবে শান্ত দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে শহরের ফুলদিঘী এলাকায় ভাড়া বাসায় বাস করতেন। তিনি সৈয়দ আহম্মেদ কলেজে ডিগ্রিতে পড়াশোনার পাশাপাশি ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন।