হোস্টেলে অবন্তিকাকে পড়তে দিতো না আম্মানের সহযোগীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকী ও তার সহযোগীদের উত্যক্তে হোস্টেল ছেড়ে ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন নিহত ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। শুক্রবার (২২ মার্চ) একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটিই দাবি করেছেন তার মা তাহমিনা শবনম।
তিনি বলেন, হোস্টেলে আম্মানের সহযোগী কয়েক মেয়ে অবন্তিকাকে পড়তে দিত না। কাপড়চোপড় ডাস্টবিনে ফেলে দিত। বিছানায় চিনি ঢেলে রাখত। পরীক্ষার আগে বই সরিয়ে নিত। রুমে ডিজে পার্টি করত। এক পরীক্ষার আগে রাত ১১টায় ওর মামা হোস্টেল থেকে ওকে বাসায় নিয়ে যায়।
আম্মানের সঙ্গে ঝামেলা নিয়ে শবনব বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে জবিতে ভর্তির পরপরই আম্মান ও তার চক্রের ১০-১২ জনের টার্গেট হয় অবন্তিকা। ক্লাসে প্রথম হওয়া এর অন্যতম কারণ। নানাভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করত। মেয়েকে বলতাম– একটু সহ্য করো, ঠিক হয়ে যাবে। প্রথমবর্ষে থাকতেই বিমানবাহিনীতে ওর চাকরি হয়। এক বছর পর জবিতে ফিরে এলে অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়।
অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় মা তাহমিনা শবনম আম্মানসহ আরও ৮-১০ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, আম্মানসহ ৮-১০ জন সবসময় ওর পিছে লেগে থাকত, অবন্তিকা প্রায়ই সে কথা বলত। এই চক্রে আছে রাগিব হাসান রাফি, রেজাউল, লাকি আক্তার, বন্যা, আঁখি, রিমি, সামিরা, গীতা মণ্ডল, মহিম ও সুমাইয়া।
তিনি বলেন, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর কেউই এ মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন না।
আত্মহত্যার দিন ইফতারের পূর্বে অবন্তিকার সঙ্গে সর্বশেষ কথা মা তাহমিনা শবনমের। তিনি বলেন, ইফতারের আগে ওর মন খারাপ দেখে জানতে চাই– কী হয়েছে? উত্তরে বলে– মা, ওরা মনে হয় আমাকে বাঁচতে দেবে না। সারাক্ষণ পিছে লেগে থাকে। বাসায় এসেও শান্তি পাই না। আম্মান নাকি প্রতিশোধ নেবে। আমি মরে না যাওয়া পর্যন্ত ওরা শান্তি পাবে না।
গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাও এলাকার অরণি নামের ভাড়া বাসায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে মৃত্যুর জন্য সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মানকে দায়ী করেন। এরপর দায়ীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।