১৬ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৫

অভিজাত পাড়ায় পেশাদার চোর সাবেক সচিবের মেয়ে, ৮০০ মোবাইল চুরি

অবসরপ্রাপ্ত এক যুগ্ম সচিবের মেয়ে জুবাইদা সুলতানা (৪৪)। রাজধানীর অভিজাত পাড়ার বিভিন্ন হোটেল, ক্লাবে চুরির উদ্দেশ্যে ভুয়া পরিচয়ে সেমিনার এবং নানা প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশন ও অংশগ্রহণ করতেন তিনি। অভিজাত চোরের খ্যাতি পাওয়া এই নারী গত ১২ বছরে প্রায় আট শতাধিক মোবাইল ফোন চুরি করেছেন।

অবশেষে ঢাকা ক্লাবে গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিষয়ক এক সেমিনারে অংশ নেয়া চিকিৎসকের মোবাইল চুরির মামলার সূত্র ধরে অভিজাত এলাকার এই চোর জোবাইদাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মহিলাদের ১৬টি হ্যান্ডব্যাগ, চারটি মোবাইল, পাঁচটি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, অলংকার, বিভিন্ন সুপার শপের কার্ড, চারটি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়।

শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, জুবাইদা অভিজাত চোর। তার টার্গেট চাকরিজীবী নারী ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়া নারী শিক্ষার্থীরা। তিনি ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, রেডিসন এবং সোনারগাঁওয়ের মতো অভিজাত হোটেলে যেতেনই মূলত: চুরি করতে।

ডিবি বলেন, অভিজাত পাড়ার এসব হোটেল ক্লাবে নানা সময় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন সভা-সেমিনারের আয়োজন করা হয়। জুবাইদা বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলে ও রেস্টুরেন্টে পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের সভা-সিম্পোজিয়াম, সেমিনারে পারিবারিক কোনো পরিচয়ে রেজিস্ট্রেশন করতেন না। একেক সময় ভিন্ন ভিন্ন ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করে অংশগ্রহণ করতেন। সারাদিন গুরু-গম্ভীর আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চুরি করে সটকে পড়তেন। চোরাই জিনিস ব্যবহার করে যাপন করতেন বিলাসী জীবন। বিগত ১২ বছর ধরে জুবাইদা চুরি করে আসছেন। নিজেকে রাখতেন পরিমিতভাবে গুছিয়ে।

হারুন অর রশীদ বলেন, জুবাইদার বাবা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব। তার বোন গ্রামীণ ফোনের বড় কর্মকর্তা। তার এসব খারাপ অভ্যাসের জন্য তাকে পরিবার থেকে বিতাড়িত করা দেওয়া হয়েছে। জুবাইদ বিয়ে করেছেন দুটি। তার বর্তমান স্বামীর তিনি চতুর্থ স্ত্রী। তার স্বামী বর্তমানে সৌদি প্রবাসী। স্বামী সৌদিতে থাকলেও জুবাইদার চুরি করা জিনিসপত্র বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন।