অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা
অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম লিপির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। গত রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পত্রে।
অভিযোগনামায় বলা হয়েছে, সান্দিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ২ লাখ টাকার চেক প্রদান করতে ২০ হাজার টাকা দাবি এবং টাকা না পেয়ে ২০২২ সালের জুনের চেক নভেম্বরে প্রদান করা, কেন্দুয়ায় ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে জরিপের ১২ হাজার টাকা আত্মসাৎ, অর্থের বিনিময়ে অস্তিত্বহীন ৩৮-৩৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সফটওয়্যারে নতুন আইডি ও পাসওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শুমারীতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া, অডিট কার্যক্রমের কথা বলে উপজেলা উজেলার ১৮২টি বিদ্যালয় থেকে ২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিদর্শনে বিভিন্ন শিক্ষকদের মোটরসাইকেল ও একজন শিক্ষকের প্রাইভেট কার ব্যবহার করা, বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তিতে দেরি হলেও প্রায়ই বিলের চেক বিলম্বে পরিশোধ করা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত লিফলেট বিতরণ ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে প্রতি বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার টাকা নেয়া, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনকালে সকল শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষা কর্মকর্তা এবং স্ট্যাফদের সাথে আলাপ চারিতা অশালীন মন্তব্য, খারাপ আচরণ করা, দেরিতে অফিসে আসা এবং প্রায়ই সপ্তাহে ১/২ দিন অফিস করার অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা-২০১৮ মোতাবেক অসদাচরণ ও দুর্নীতির পর্যায়ভুক্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আরো পড়ুন: উপাচার্যের কার্যালয়ে লাঞ্ছনার শিকার কুবি শিক্ষকরা, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা বেগম লিপি বলেন, বিভাগীয় মামলায় যেসব বিষয় উল্লেখ করে অভিযোগনামা দেওয়া হয়েছে সে সবের একটিও সত্যতা প্রমাণ হবে না। কিছু শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে হয়রানি করার জন্য এসব অভিযোগ এনে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র যেভাবে ষড়যন্ত্র করছে, তা আমি মোকাবেলা করব। কোন অন্যায় করিনি, অন্যায় সমর্থন দিয়ে আমি আমার কর্মস্থল থেকে অন্যত্র যেতেও চাই না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমার শাস্তি হলেও কোনও আপত্তি থাকবে না।
সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাসলিমা বেগম লিপির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিভাগীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।