গোয়েন্দা পরিচয়ে নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন আল-আমিন
গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে নারী ক্রিকেট দলের এক সদস্যকে বিয়ে করেন আল-আমিন (২৯)। এরপর টার্গেট করে চুরির কাজ করেন। পরে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হন আল-আমিন দেওয়ান ওরফে আযান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব কথা স্বীকার করেছেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দিনাজপুর থেকে আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩ ও ২। এ সময় চারটি আইফোনসহ পাঁচটি ফোন, চেক বইয়ের পাতা, মাস্টার কার্ড, বৈদেশিক মুদ্রা, তিনটি হাত ঘড়ি, চারটি চেইন, একটি নোজপিন, ব্রেসলেট, দুটি আংটি ও হ্যান্ডব্যাগ জব্দ করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আল-আমিন মূলত প্রতারণার টার্গেট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইডি খুলে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। সুন্দরী নারীদের আকৃষ্ট করতে ছবি পোস্ট করতেন। টিকটক ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতেন। এভাবে নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিত দেখা করতেন।
তিনি জানান, অনেক ক্ষেত্রে নারীকে বিয়ে করে বা না করে সুবিধাজনক সময়ে তাদের অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কৌশলে আত্মগোপনের জন্য অন্যত্র অবস্থান করতেন। এসময় ফেসবুক আইডি ডিলেট করে দিতেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কিছুদিন পর আরেকটি আইডি খুলে একই কাজ করতেন।
কমান্ডার মঈন আরও বলেন, আল আমিন নিজেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তার পরিচয় ও ছুটিতে কাপড়ের ব্যবসা করছেন বলে নারী ক্রিকেটারের সঙ্গে পরিচিত হন। একপর্যায়ে ১৭ দিনের মাথায় গত ১২ জানুয়ারি নারী ক্রিকেটারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।
কমান্ডার মঈন বলেন, নারী ক্রিকেটারসহ চারজন তিন বছর ধরে রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছিলেন। কৌশলে নারী ক্রিকেটারকে বিয়ের সূত্রে আল-আমিন ওই ফ্ল্যাটে আলাদা রুমে বসবাস করতে থাকেন। এসময় তিনি তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
আরো পড়ুন: প্রাথমিকের প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্রে অধ্যক্ষও, সবাই পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি সতীর্থদের নিয়ে অনুশীলনে যান ক্রিকেটার। এ সময় আল-আমিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়ারড্রবের তালা ভেঙে ডলার, চেক বই, ভিসা কার্ড, সাড়ে ৬ হাজার টাকা ও তাদের ব্যবহৃত ব্যাগ নিয়ে খেলাঘর মাঠে আসেন। এ সময় তাদের অনুশীলনের ভিডিওর কথা বলে ক্রিকেটারের আইফোন দুইটি নিয়ে কিছুক্ষণ ছবি তুলে পালিয়ে যান।
পরে রাজধানীর একটি পুরোনো মালামাল বিক্রির মার্কেটে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করে বাসযোগে রংপুর গিয়ে রাতে হোটেলে থাকেন। র্যাবের বলেন, আল-আমিন ২০১১ সালে রাজধানীর একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কাপড়ের দোকানে চাকরি করেছেন। পরে ২০১৬-১৭ সাল থেকে নারীদের সঙ্গে প্রতারণাসহ অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি ও প্রতারণা করতে থাকেন। ২০২২ সালে প্রথম বিয়ে করেস।
এর আগে কয়েকজন নারীর সঙ্গে তার প্রতারণার বিষয়ে প্রথম স্ত্রী জানতে পারলে তাদের বিচ্ছেদ হয়। আল-আমিনের বিরুদ্ধে ঢাকা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন থানায় চারটির বেশি মামলা রয়েছে। তিনবার বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন বলে জানান তিনি।