ভারত-পাকিস্তানের প্রতারকদের সঙ্গে মিলে কলেজপড়ুয়া ২ ছাত্রের ‘হ্যানি ট্র্যাপ’
পাকিস্তান এবং ভারতের প্রতারকদের সঙ্গে মিলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতানোর ঘটনায় জড়িত দুই কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চক্রটি বিভিন্নজনের সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক গড়ার পর ভিডিওকলের মাধ্যমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সেসব ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত।
প্রতারণার শিকার ব্যক্তির দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে ঢাকা মহনগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। গত ২০ ডিসেম্বর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের বিবিএ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. টিপু সুলতান (২৭) এবং তিতুমীর কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী মো. মোসলেম রানাকে (২৮) গ্রেপ্তার করে।
দুই ছাত্রকে পাকিস্তান-ভারতের প্রতারক চক্রের বাংলাদেশি এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেন এই বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ।
প্রতারণার এই কৌশলকে ‘হানি ট্র্যাপ’ বলা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, তারা উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র, এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলত। এক পর্যায়ে তাদের অজান্তে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করে অর্থ হাতিয়ে নিত। কিছু ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে পরিচয়ের পর তারা অল্প সময়ে বেশি উপার্জনের আশায় মূলত এই কাজে যুক্ত হয় তারা।
গ্রেপ্তার মোসলেম রানার মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় হত বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা শাকিল নামের একজন ভারতীয় নাগরিক, আর পারভেজ নামের একজন হচ্ছেন পাকিস্তানী এজেন্ট।
তিনি জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর শাহবাগ থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বাংলাদেশি দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর ভারত-পাকিস্তানের প্রতারকচক্রের খোঁজ মেলে।
সাইফুর রহমান আজাদ জানান, ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা পাওয়ার পর বাংলাদেশি প্রতারকরা তার একটি নিদিষ্ট অংশ রেখে বাকি টাকা বাইন্যান্স ওয়ালেট দিয়ে বিদেশি প্রতারকদের পাঠিয়ে দেন।
টাকার পরিমাণ বেশি হলে তা প্রথমে কোনো ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে বলা হয়। পরে টাকা তুলে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।