এলাকা থেকে চেয়ারম্যানের নাম মুছে ফেলার হুমকি, এমপিকে শোকজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের নাম নাসিরনগর থেকে মুছে ফেলার হুমকি দিয়েছেন সংসদ সদস্য (এমপি) বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন। এ হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে তলব করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
আজ রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) এমপি ফরহাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল পাঁচটায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ ও নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির প্রধান মোহাম্মদ রেজাউল হক এ চিঠি দিয়েছেন। চিঠি ফরহাদ হোসেনের কাছে পৌঁছানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২৩ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে ‘চেয়ারম্যানের নাম মুছে দিতে চান এমপি, হাত ভাঙার হুমকি আ. লীগ নেতার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা কমিটির নজরে আসে। এমপির বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ১১ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এমন অবস্থায় আপনার (ফরহাদ) বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করা হবে না তৎমর্মে ২৪ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯১ এ (৫) (এ) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
এর আগে, গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কুন্ডা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার উদ্দেশে সংসদ সদস্য বলেন, ‘এই নাসিরনগর থেকে তোমার নাম মুছে যাবে।’ জনসভার ওই বক্তব্যের ৬ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
বক্তব্যের ওই ভিডিওতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেন, ‘নাম বলতেও আমার লজ্জা লাগে। নিজেকেই আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করে, আমি কি মানুষ এত কম চিনলাম? আমি কীভাবে মানুষ চিনলাম। আমি নাম ধরেই বলছি। নাসির (কুন্ডার ইউপি চেয়ারম্যান) আপনাদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আমি খুব অবাক হয়ে গেছি। তার আগের দিন আমার সঙ্গে সে মিছিল করেছে। হঠাৎ কি হলো। আমি তো জানতাম নাসির, তোমার ভাইয়েরা শিক্ষিত। তোমার বড় ভাইয়েরা শিক্ষিত। তুমি একজন শিক্ষিত পরিবারের সন্তান। কিন্তু তুমি মনে রেখ, তুমি খালি কুণ্ডাবাসী নয়, এই নাসিরনগর থেকে তোমার নাম মুছে যাবে। আমি আজকে বলে দিয়ে গেলাম। নড়চড় মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। এটা আমি বলছি। এবং নাসিরের বড় ভাইদেরকে বলছি, আপনারা যে স্বপ্ন দেখছেন, সেই স্বপ্নেও গুড়েবালি। আপনাদেরকে নিয়েও মানুষ কথা বলবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন নৌকার প্রার্থী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ৫ জন।