অফিস কেরানি নিচ্ছেন নতুন শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৫ AM , আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১১ AM
অফিস সহকারী পরিচয় দিলেন শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক, কম্পিউটারের ডেমোনেস্ট্রেটর পরিচয় দিলেন ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। এমন ভুয়া শিক্ষক পরিচয়ে ঢাকার ধামরাইয়ে নতুন শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন স্কুলের অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার ল্যাব কর্মকর্তারা। শুক্রবার প্রশিক্ষণের চতুর্থ দিনে বিষয়টি জানতে পারেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। পরে তিনি ১০ জনকে প্রশিক্ষণ কক্ষ থেকে প্রত্যাহার করেন।
শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থেকে তথ্য গোপন করে তাদের পাঠানো হয়েছিল- এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন কারিকুলামে সাত দিনের প্রশিক্ষণের জন্য ধামরাইয়ের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা প্রধানরা ৬৯৫ জন শিক্ষকের তালিকা পাঠান। তাদের নিয়ে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ধামরাই সরকারি হার্ডিঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। এ কার্যক্রম শেষে অংশগ্রহণকারীদের ৮ হাজার ৫০০ টাকা করে সম্মানী পাওয়ার কথা।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক ও খণ্ডকালীন শিক্ষকরা প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন। তবে তথ্য গোপন করে উপজেলার বালিয়া ওদুদুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়, শৈলান সুরমা উচ্চ বিদ্যালয়, কাকরান দাখিল মাদ্রাসাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়ক, কম্পিউটার ল্যাব কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
জানা গেছে, বালিয়া ওদুদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটারের ডেমোনেস্ট্রেটর নজরুল ইসলামকে তালিকায় দেখানো হয়েছে ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে। কম্পিউটার ল্যাব সহকারী মিজানুর রহমানকে ডিজিটাল টেকনোলজির সহকারী শিক্ষক, এসডিআরএলের ল্যাব সহকারী আরিফুল ইসলামকে জীবন ও জীবিকা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক, ইলেকট্রিক্যালের ল্যাব সহকারী মনির হোসেনকে শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক এবং অফিস সহকারী উজ্জ্বল হোসেনকে শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক দেখানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণরত কয়েকজন শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু কে কোন ক্লাস নেন জানাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। কেউ আবার নামের সঙ্গে যে বিষয়ের শিক্ষক লেখা রয়েছে তাও বলতে পারেননি।
নজরুল ইসলাম বলেন, 'দশম শ্রেণিতে পড়াই সামাজিক বিজ্ঞান। নবম শ্রেণিতে কৃষি, ইসলাম শিক্ষা ও সামাজিক বিজ্ঞান। অষ্টম শ্রেণিতে সামাজিক বিজ্ঞান।' মিজানুর রহমান বলেন, তিনি অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে আইসিটি পড়ান।
মনির হোসেনের ভাষ্য— ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে শিল্প, সংস্কৃতি, জীবন-জীবিকা বিষয়ে ক্লাস নেন। আরিফুল ইসলামের দাবি, তিনি কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে পাঠদান করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহীন আশরাফী বলেন, কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ১০ জন অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার ল্যাব কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তথ্য গোপন করে যেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান তালিকাভুক্ত করে পাঠিয়েছেন তাদের কারণ দর্শাতে নোটিশ দেবেন।