যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার লোভে যুবকের ফাঁদে ৫০ নারী, অতঃপর...
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:০২ AM , আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২২ AM
ফেসবুকে ভুয়া প্রোফাইল সাজিয়ে নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন বেনজির হোসেন নামে এক ব্যক্তি। নিঃসঙ্গ নারীরা ছিল তার টার্গেট। তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বলে নারীদের সঙ্গে পরিচয় দিতেন এবং তাদেরকে বিয়ে করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনও দেখাতেন। পরে বিভিন্ন অজুহাতে নারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন বেনজির। অন্তত ৫০ জন নারী তার প্রতারণার ফাঁদে অর্থ হারিয়েছেন। ভুক্তভোগী এক নারীর করা মামলার তদন্তে নেমে গত ২২ নভেম্বর খুলনা থেকে বেনজিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এরপর তার কাছ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। বেনজির নড়াইল সদরের আড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি-প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, ফেসবুকে ভুয়া প্রোফাইল সাজিয়ে নিঃসঙ্গ নারীদের টার্গেট করতেন বেনজির। প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে, পরে বিয়ের প্রলোভন ও সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। এভাবে প্রায় পাঁচ বছরে তিনি বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
সিটিটিসি-প্রধান জানান, বেনজির অডিও কলে কথা বললেও নানা অজুহাত দেখিয়ে ভিডিও কল এড়িয়ে যেতেন। অনলাইনে প্রেমের এক পর্যায়ে বিভিন্ন রকম বিপদে পড়ার কথা বলে বিভিন্ন এমএফএস (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস) নম্বরে টাকা নিতেন। এর পাশাপাশি পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা, ইন্স্যুরেন্স স্ক্যাম, সেনাবাহিনী ও পুলিশে চাকরির নামে প্রতারণা, হুন্ডি ব্যবসা, মানব পাচারসহ নানা অপরাধে বেনজির জড়িত।
আরও পড়ুন: এইচএসসিতে ফেলের 'হ্যাটট্রিক' বেপারী টোলা আদর্শ কলেজ
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ৫০ জনকে পাওয়া গেছে, যারা বেনজিরের প্রতারণার শিকার। তার প্রতারণার শিকার হয়ে এক নারী আত্মহত্যাও করেছেন। এ ছাড়া এক নারী বেনজিরের প্রতারণার শিকার হয়ে গত সাত মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা খুইয়েছেন। আরেক নারী খুইয়েছেন প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তাদের মধ্যে একজন গত ২১ নভেম্বর ডিএমপির ওয়ারী থানায় মামলা করেন। পরে তদন্তে নামে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। পরদিন বেনজিরকে খুলনার ফুলতলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাড়িতে বসেই এমন প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতারণা করে পাওয়া অর্থ তিনি ক্যাশ আউট করতেন বাড়ি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে যশোর কিংবা খুলনার বিভিন্ন ক্যাশ আউট পয়েন্টে গিয়ে। বেনজিরের প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১৩টি নম্বরে গত চার মাসে ১ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, এইচএসসি পাস করে একটা চাকরিতে যোগ দেন বেনজির। কিন্তু চুরির দায়ে সেই চাকরি চলে যায়। পরে প্রতারণাই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি।