মুক্তিপণ না পেয়ে স্কুলছাত্রকে হত্যা, ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজের চারদিন পর তৌহিদুল ইসলাম (১৯) নামের এক স্কুলছাত্রের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি অপহরণ করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই টাকা না পেয়ে খুন করা হয়েছে তাকে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার এক কাশবন থেকে তৌহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানাকে (২৭) দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার গাসারিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন তৌহিদুল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা বলেন, গতকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে দিনাজপুর জেলার কাহারোল থানার গাসারিয়া (ছাপড়া পাড়া) এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জুয়েল রানাকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল পুলিশকে জানিয়েছে, গত ২৩ নভেম্বর রাত অনুমান সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ভিকটিম তৌহিদুলকে টাকা আদায়ের জন্য কৌশলে ডেকে আনে জুয়েল। পাওনা ১০ লাখ টাকা ফেরত পেতে তৌহিদুলকে চাপ দিলে জুয়েলের উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় সে। পরে সেই ছুরি কেড়ে নিয়ে তৌহিদুলকে আঘাত করলে মৃত্যু হয় তার। পরে তার মরদেহ ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পি ব্লকের কাশবনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। জুয়েল রানা একটি প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন বলে জানান এসি রাজন।
ডিএমপির ভাটারা থানায় তৌহিদুলের বাবা নবী হোসেনের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, তৌহিদুল ডুমনি আমিরজান স্কুল এন্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়েন। ২৩ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে তৌহিদুল বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ বাসায় ফিরে না আসায় তার মোবাইল ফোনে কল করলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তৌহিদুলের মোবাইল ফোন থেকে তার মাকে ফোন করে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি জানান তৌহিদুল তাদের কাছে আছে। তৌহিদকে পেতে হলে ২ ঘণ্টার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে এবং তাদেরকে দাবিকৃত টাকা না দিলে তৌহিদুলকে মেরে ফেলার হুমকিসহ বিভিন্ন প্রকারের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
তদন্তকারী এ অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করা জুয়েল ১০ লাখ টাকা নিহত তৌহিদকে দেওয়ার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।