অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ১৪ বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না রাখার অভিযোগ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৪ PM , আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:০১ PM
দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক কোটি এক লাখ ২৭ হাজার ৭০০ টাকার কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ১৪ বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না রাখার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তা সত্ত্বেও তাঁকে আবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিযুক্ত করা হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে দিনাজপুর কেন্দ্রের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সৈয়দ মো. রেজাউল করিম খন্দকার বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু গত বছরের নভেম্বর মাসে আবার এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন মাসুদ রানা।
অভিযোগ যা বলা হয়েছে
দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সৈয়দ মো. রেজাউল করিমের সই করা অভিযোগে বলা হয়েছে, মাসুদ রানা ২০০৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি ওই অনিয়ম করেন। তাঁর নির্ধারিত চীনের ব্র্যান্ড ও মডেলের ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পিএলসি মেশিন কেনার অনুমোদন নেওয়া হয়। তবে এই মেশিনের দাম তিন-চার লাখ টাকা।
পাশাপাশি চারটি ডিজিটাল ইন্টার্যাক্টিভ বোর্ড আট লাখ টাকা হারে ৩২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বাস্তবে এসব বোর্ডের দাম তিন লাখ ২০ হাজার টাকা। গার্মেন্টস ট্রেডের জন্য প্রকল্পের আওতায় চার লাখ টাকা মূল্যের ভারতের তৈরি একটি ফ্যাব্রিকস ইন্সপেকশন মেশিন কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর দাম সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা। চার হাজার কেজি রড ও ৫০ হাজার ইটের হিসাব দিতে পারেননি মাসুদ রানা। এ ছাড়া প্লাম্বিং ট্রেডের প্রায় ছয় লাখ টাকার বিভিন্ন কাঁচামালের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগে আরো বলা হয়, মোটর ড্রাইভিং কোর্সের জন্য শুধু তেলের ভাউচার দেখিয়ে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। অনেক স্থায়ী কাঁচামাল কেনার দাবি করা হলেও সেগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনটি দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং ভেতরের কাগজপত্র পরিবর্তন করে ও সই জাল করে মোট ছয় লাখ সাত হাজার ৭০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত তিনজন।
১৪ বছরে ছিল না আয়-ব্যয়ের হিসাব
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরম বিক্রির আয়-ব্যয়ের কোনো রেজিস্ট্রি বা রিসিট বই নেই। এতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদ ও তাঁর সহযোগীরা প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া কাজ না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের প্রি-ডিপার্চার কোর্স শুরু হলেও এই কোর্সের আয়-ব্যয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব নেই। এই কোর্সের আয়-ব্যয়ের হিসাবে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে।
তবে মাসুদ রানা বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ করছে। তার কারণ হলো আমি ছিলাম দিনাজপুরে। এরপর বদলি হয়ে যাই কুড়িগ্রামে। কুড়িগ্রাম থেকে উনি আসেন দিনাজপুরে। উনি দিনাজপুরে যাওয়ার পর একটা ভিজিট হয়। ভিজিটটা হচ্ছে, তিনি কোনো বাড়িভাড়া দেননি। এটা নিয়ে যখন মন্ত্রণালয়ে কথাবার্তা হয় তখন উনার ধারণা এটা আমি বলছি। তখন এই ইস্যু ধরে উনি আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে এটা মিথ্যা অভিযোগ।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ধরেননি।