১৪ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২২

সাংবাদিক হেনস্তায় সাবেক ‘বহিষ্কৃত’ ছাত্রলীগ নেতাকে হল ছাড়ার নির্দেশ!

মেহেদী হাসান  © ফেসবুক থেকে নেয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মরত এক সাংবাদিককে হেনস্তার সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এসএম) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ‘বহিষ্কৃত’ সভাপতি মেহেদী হাসানকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

এছাড়া, এ ঘটনায় জড়িত থাকায় হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দ্রুব রায়হান ওরফে রনিকে  ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ নির্দেশ দেয়া হয়।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনায় করা নিউজ করে ঢাবির ঢাকাটাইমস এর প্রতিবেদক এন এইচ সাজ্জাদ। পরে সন্ধ্যায় এসএম হলের ওই সাংবাদিকের নিজ রুমে গিয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রনি বলেন, ‘চল, মেহেদী ভাই তোকে ডাকছে’।

তখন সাজ্জাদ যেতে না চাইলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে রনি এবং জোর করে টেনে রুমের বাইরে নিয়ে অাসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সহ-সম্পাদক মিসবাহুল হক ও ভোরের পাতার নিজস্ব প্রতিবেদক তৌহিদ জামান।

পরে বিষয়টি ঢাবি সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে ছাত্রলীগকে জানানো হলে দুঃখ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ঘটনাটি অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। সাংবাদিকরা অামাদের বন্ধু, শত্রু নয়। এই ঘটনায় অামরা দুঃখ প্রকাশ করি। অাশা করি অদূর ভবিষ্যতে এই রকম কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।’

তিনি বলেন, ‘মেহেদী হল শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা। বিভিন্ন সময় নানা অপকর্মের জড়িত থাকার কারণে তাকে অাগেই হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’

তিনি অারো বলেন, ‘এই অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার দায়ে তাকে অাজকের মধ্যে হল থেকে বের হয়ে যেতে হবে নইলে অামরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিব।’

রেজওয়ানুল হক চোধুরী শোভন বলেন, ‘অামরা অত্যন্ত দুঃখিত কারণ অামাদের এক সাংবাদিক ভাইকে লাঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে। এই ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে অামরা ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। অাশা করি অতীতে এই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।’

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগের পিকক বারে মদ নিতে গিয়ে দোকান বন্ধ পান মেহেদী। সেসময় দোকান খোলা নিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। এরই একপর্যায়ে কর্মচারীরা তাকে মারধর করে। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি ঘটনাটি হলে জানালে হলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক দিদার শতাধিক কর্মী নিয়ে শাহবাগে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এসময় কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। তাদেরকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন মেহেদী হাসানকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরের কমিটিতে (সোহাগ-জাকির) কোন পদ পায়নি মেহেদী হাসান।