বিমানবন্দরে রোহিঙ্গা পরিবারের পাকস্থলী থেকে ৬ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাকস্থলীতে ইয়াবা বহনের দায়ে নারী ও শিশুসহ ৬ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের পাকস্থলীতে বহন করা ৬ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
রোহিঙ্গা পরিবারটি গতকাল সন্ধ্যা সাতটার সময় নভো এয়ারের কক্সবাজার ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। পরিবাটি কক্সবাজার টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের অধিবাসী। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে নভো এয়ারের কক্সবাজার ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণের পর এই পরিবারের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে এয়ারপোর্ট এপিবিএন গোয়েন্দা দল তাদের ওপর নজর রাখতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তাদেরকে আটক করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। তৎক্ষণাৎ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ইয়াবা বহন বা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
নিজেদেরকে তারা বাঙ্গালি পরিবার হিসেবেও দাবী করেন। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হয় পরিবারটি ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই সন্দেহ যাচাই করতে পরিবারের চার সদস্যকে বিমানবন্দর সংলগ্ন উত্তরার একটি প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশু মো. রুবেল (১৫), তার ফুফু আছিয়া বেগম (২৫) ও চাচী জোহুরা বেগমের (৩০) পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর আরও জোরদার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা স্বীকার করেন যে তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছেন।
এডিসি জিয়াউল হক বলেন, ইয়াবা বহনের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেয়ার পর তাদের জাতীয়তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করেন। ৬ সদস্যের এই পরিবার ইয়াবা বহনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন সঙ্গে থাকা আছিয়া বেগমের স্বামী আলী আহমদ। এসময় আছিয়া বেগমের সঙ্গে তার সাত মাসের শিশু উমায়ের হোসেন ও জহুরা বেগমের সঙ্গে তার ১০ মাসের শিশু উম্মে ছালমাও ছিল। এরপর রাতেই তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় এপিবিএনের একটি দল।
তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে ৩ রোহিঙ্গা নাগরিকের পাকস্থলী থেকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধায়নে মোট ১৩০টি ইয়াবার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এইসব ইয়াবার প্যাকেট থেকে মোট ৬ হাজার ২৭৫ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শিশু রুবেলের পাকস্থলীতে ৪০ প্যাকেটে মোট ১ হাজার ৯৩০ পিস, আছিয়ার পাকস্থলীতে ৫২ প্যাকেটে মোট ২ হাজাত ৫১১ পিস এবং জহুরা বেগমের পাকস্থলীতে ৩৮ প্যাকেটে ১ হাজার ৮৩৪ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।