২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:২২

ইউএনওর স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে সড়কে বসে পড়লেন কলেজশিক্ষিকা

জয়পুরহাট জেলা মানচিত্র  © সংগৃহীত

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলামের স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন দিনাজপুরের এক কলেজশিক্ষিকা। তাদের আড়াই বছর বিয়ে হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি।

জানা যায়, জিনাত আরা নামে ওই নারী ইউএনও আরিফুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী থাকার কথা জানতে পেরে গতকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সন্তান নিয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে হাজির হন। তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাঁকে ইউএনওর কক্ষে ঢুকতে বাধা দেন। তখন তিনি সন্তান নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে বসে পড়েন। এসময় স্থানীরা সড়কে সামনে আসলে দীর্ঘক্ষণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন্দ গিয়ে তাঁকে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ নিয়ে জেলায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

কলেজশিক্ষিকা জিনাত আরা দাবি করেন, আক্কেলপুরের ইউএনও আরিফুল ইসলাম দিনাজপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকা কালে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ ১০১ টাকা দেনমোহর ধার্য করে তাঁদের বিয়ে হয়। তিনি প্রথম স্ত্রী থাকার কথা জানতেন না। বিয়ের কাবিননামায় প্রথম স্ত্রী থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। বিয়ের পর তাঁদের সংসারে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। সাপ্তাহিক ছুটিতে আরিফুল দিনাজপুরের বাসায় গিয়ে থাকতেন। পাঁচ–ছয় দিন ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তিনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। 

তিনি আরও জানান, বাধ্য হয়ে বুধবার দুপুরে আক্কেলপুরে এসে আমার স্বামী  ইউএনও মো. আরিফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর কার্যালয়ে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তার দুটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। তাঁরা তাকে সেখান থেকে বের করে দেন। এর প্রতিবাদে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কের এসে বসে পড়েন তিনি। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: কাবা শরিফের সামনে দাড়িয়ে নিষিদ্ধপল্লী উচ্ছেদের শপথ শামীম ওসমানের

ইউএনও অবশ্য এই নারীকে বিয়ে করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পরে তালাক দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।

আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, আমাকে ব্ল্যাকমেল করে ট্র্যাপে ফেলে বিয়ে করেছিল মেয়েটি। বিয়ের পর সে আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিল। আরও টাকা নিতেই পরিকল্পিতভাবে কিছু লোকজন নিয়ে আক্কেলপুরে এসেছিল আমাকে সমাজের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। ইউএনও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তালাকনামা আমরা দেখেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা এর একটি সমাধান বের করার চেষ্টা করছি।’

এদিকে বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করার পর এক সপ্তাহের মধ্যে একটি সমাধানের আশ্বাস পেয়ে জিনাত আরা রাতেই দিনাজপুরে ফিরে যান।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সালেহীন তানভীর গাজী জানান, ‘আক্কেলপুরের ইউএনওর ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যেহেতু এটি একটি ব্যক্তিগত বিষয়। তবু লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।