২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৫৫

ছাত্রলীগ নেতা রবিনের কাছে মানুষের হাত-পা কাটা ডাল-ভাত

নুরুজ্জামান ওরফে রবিন সরদার  © সংগৃহীত

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে অর্ধশত। মানুষের হাত-পা কেটে নেয় ডাল ভাতের মত। তাছাড়া অস্ত্রবাজি মাদক ব্যবসা, ধর্ষণ, গুম, চাঁদাবাজি ডাকাতি থেকে এমন কোনো অপরাধ নেই যা তিনি করেননি। তারপরও তিনি বিরাট মাপের ছাত্রলীগ নেতা। মিছিল মিটিংয়ে বড় বড় শোডাউন নিয়ে দাপিয়ে বেড়ান গোটা শহর। এ এক নেতার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট পুরো জেলা। তিনি হচ্ছেন গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের কথিত ছাত্রলীগ নেতা নুরুজ্জামান ওরফে রবিন সরদার।

চলতি মাসের ৩ তারিখে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের ছাত্র ফেরদৌসের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে নিজ সংগঠনের প্রতিপক্ষরা। গুরুতর আহত ফেরদৌস শহীদ তাজ উদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো কাতরাচ্ছেন। কি ঘটেছিল সেদিন, কারা কীভাবে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানিয়েছেন ফেরদৌস নিজেই।

তিনি বলেন, ওই দিন আমাকে গাড়িতে জোর করে তুলি নিয়ে যায়। এসময় আমি গাড়িতে উঠতে জোড়াজোড়ি করলে সুইজ গিয়ার (ছুরি) দিয়ে পায়ে তিনটি আঘাত করে। এছাড়া পিস্তলে দিয়ে মাথায়, চোখেসহ বিভন্ন জায়গায় আঘাত করে। তখন সে আমাকে বলে আমার পা একটা কেটে ফেলবে। এরপর একটি চাইনিজ কুড়াল এবং হামার বের করে। বলছে পা হামার দিয়ে ভেঙে ফেলবে। তখন অনেক আকুতি-মিনতি করেছি আমাকে না মারার জন্য।

তিনি আরও বলেন, এক সময় রবিনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি কলেজ ছাত্রলীগের প্রার্থী হওয়াতে আমার উপর তার ক্ষোভ তৈরী হয়।

ফেরদৌস ও রবিন সরদার। ছবি: সংগৃহীত

এমন নেক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ফেরদৌসের মা। তিনি বলেন, ফেরদৌস আমার একটামাত্র ছেলে। রবিন আমার ছেলের পায়ের রগ কেটে তাকে পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। সে বলে আমাদেরকেও বাঁচতে দেবে না। আমি মাননীয় প্রধানন্ত্রীর কাছে এই ঘটনা সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ঘটনা অনুসন্ধানে পাওয়া সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ভাওয়াল বদরে আলম কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছে একটি সাদা রঙের গাড়ি। পরে রবিন গাড়ি থেকে নেমে অস্ত্র ঠেকিয়ে ফেরদৌসসহ দুজনকে তুলে নিয়ে যায়। পরে গাড়ির মধ্যেই পায়ের রগ কেটে দেন রবিন সরদার।

শুধু ফেরদৌস না, রবিনের ভয়াল আক্রমনের শিকার হয়েছেন আরও অনেকে। তার সাথে রাজনীতি করতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রজীবন শেষে হয়ে গেছে বহু ছাত্রের। তাদের একজন হচ্ছে মেহেদী হাসান। বরিনের সাথে না চলায় তাকে দফায় দফায় মারধর করা হয়। বিষয়টি কলেজ কর্তপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

মেহেদী হাসান বলেন, তার সাথে রাজনীতি না করা কারনে কলেজে আসতে পারি না। একদিন কলেজে আসলে আমাকে রবিনের ভাই জীবন সরদার মারধর করে। আমার বাড়ি ভাঙচুর করেন। আমাকে বলে কলেজে আসলি কেন? এ বিষয়টি কলেজের প্রিন্সিপালসহ সকলেই জানেন। কিন্তু তারা এর কোনো বিচার করেনি। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছে।

বর্তমান ভাওয়াল কলেজের এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম রবিন সরদার। তার সঙ্গে রয়েছেন তার ছোট ভাই জীবন সরদার। দুই ভাই মিলে ভাওয়াল কলেজকে তাদের টর্চার সেলে পরিণত করেছে। কলেজে ভর্তি হয়ে তাদের পক্ষের রাজনীতি না করলে কলেজের ছাত্রবাসে আটকিয়ে নির্যাতন করা হয়।

তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার একজন ছাত্র জানায়, তাদের মিছিল মিটিংয়ে যদি না যাই তাহলে যেন কলেজে না আসি। ওই দিন কলেজে আসার পরে আমার হোস্টেলের ভেতরে নিয়ে অনেক মারধর করে। তারদের মারধরের কারণে এক সপ্তাহের বেশি সময় কানে কিছুই শুনিনি। শুধু আমি না, তাদের হাতে এমন আরও অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

কলেজে ছাত্রবাসে তারা ইয়াবা, গাঁজা সেবন করতো। কলেজ ছাত্রবাসে তিনজন বৈধ ছাত্র ছাড়া আর বাকি সবাই ছিলেন অবৈধ। তারা বাইরে অঘটন ঘটিয়ে ছাত্রাবাসে এসে থাকতেন। এছাড়া ছাত্রী হোস্টেলেও তাদের বিচরণ ছিল অবাধ। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাদের নির্যাতনের শিকার হতে হতো।

শুধু নির্যাতন নয়, কলেজে চাঁদাবাজি থেকেও তাদের হাত থেকে রেহায় পায়নি রং মিস্ত্রী। কলেজের রিপিয়ারিং ও রঙয়ের কাজ করেন জাকির হোসেন। রবিন বাহিনীকে ৭০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় কাজ বন্ধ করে দেয় তার। এছাড়া মিস্ত্রীদের আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

ভাওয়াল কলেজের এক কর্মচারী বলেন, তারা কলেজে বসে ঠিক করে কাকে মারধর করা যায়। পরে তাদের ধরে এনে মারধর করে। এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। এমনি কলেজ কর্তৃপক্ষও তাদের কিছু বলে না।

চলতি মাসের শুরুতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অধক্ষের রুম ভঙচুর করে রবিন-জীবন বাহিনী। এ ঘটনা গড়ায় থানা পুলিশ পর্যন্ত। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে ছাত্রাবাস। দুজন ছাত্রের কারণে অতিষ্ঠি কলেজের শিক্ষার্থী-স্টাফসহ আশপাশের মানুষজন। তবে কলেজ প্রশাসন বলছে তাদের এমন কর্মকাণ্ডের সম্পর্কে তার কিছুই জানেন।

হোস্টেল সুপার ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, সে আমাদের কলেজের ছাত্র ছিল। অপর দিকে সে একজন ছাত্রনেতা। রাতে যাদি কেউ আসে তাহলে দেখাশোনা করা খুবই কষ্টসাধ্য।

কলেজ অধ্যক্ষ মাসুদা সিকদার বলেন, এসব বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। সুতরাং আমরা এইভাবে জানি না। আমি শুনেছি ক্লাস রুমে একজনকে মেরেছে। পরে তথ্য পেলাম আরও অনেককে মেরেছে।

তবে পুলিশ বলছে রবিন-জীবন বাহিনীর উত্থানের পেছনে কলেজ প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে। গাজীপুর মেট্টপলিটন কমিশনার মাবুব আলম বলেন, ভাওয়াল কলেজকে কেন্দ্র করে এ সন্ত্রসী কর্মকাণ্ড চলতো। ছাত্রবাসকে ব্যবহার করা হতো এ কাজে। সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও কিছু গাফিলতি ছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষের কিছু দুর্বলতা ছিল, যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

রবিন সরদার ও জীবন সরদার। ছবি: সংগৃহীত

শুধু ভাওয়াল কলেজে অপরাধ করে ক্ষ্যান্ত থাকেনি রবিন-জীবন বাহিনী। তাদের কারণে পুরো গাজীপুরবাসী থাকতেন আতঙ্কে। তুচ্ছ কারণে কারো কেটে নিয়েছে হাত কারো আবার পা। কোনো কারণ ছাড়া কতজনকে কুপিয়ে যখম করছে তার কোনো হদিস নেই। তুচ্ছ কারণে শতশত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে তান্ডব চালায় বিভিন্ন হোটেল, গার্মেন্টস এমনকি মানুষের বাসা-বাড়িতেও। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন মানুষের ভাড়েটে হিসেবে কাজ করে রবিন-জীবন বাহিনী।

এমনি এক ঘটনার শিকার সাকিব নামে এক তরুণ। ২০১৮ সালে জয়দেবপুরের রথ মেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে তুলে নিয়ে যায় রবিনের ছোট ভাই জীবন সরদার। পরে বরিনের সাথে পরামর্শ করে বালুর মাঠে নিয়ে কুপিয়ে সাকিবের পা কেটে নেয় জীবন। এ ঘটনার সময় সাকিব এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। পরে তার আর পরীক্ষায় বসা হয়নি। এখন তিনি ঘরেই দিন-রাত পার করছেন করছেন।

সাকিবের মা আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে বলেন, আমার সব সময় এলাকায় হাসি খুশি নিয়ে সবার সাথে চলাফেরা করতো। আমর সে ছেলে টা এখন ঘর থেকে বের হয় না।

সাকিবের বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আজ আমার ছেলের হয়েছে, কাল অন্যজনের হবে। তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। আমরা তো অসহায় হয়ে রয়েছি, জিম্মি হয়ে রয়েছি। কখন কোন ক্ষতি হয়ে যায় সে কারনে আমরাও বের হইনা।

এর কিছু দিন পর তুহিন নামে এক ছেলের হাত কেটে নেয় রবিন সরদার। এ বিষয়ে ভয়ে তুহিনের পরিবার কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে মোবাইলে তাদের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে তুহিনের বোন বলেন, এখন এমন পর্যায়ে রয়েছে সে কোনো কাজ করতে পারে না। এমনকি কোন ব্যবসা করবে সে আর্থিক সামর্থও আমাদের নেই।

২০১৯ সালে সিফাত নামে এক ছেলে কুপিয়েছে রবিন সরদার। সিফাত জানান, তার চাচাতো ভাইকে কোপাচ্ছিল রবিন সরদার। তখন সে ঠেকাতে গেলে রবিনের হামলার শিকার হন। তখন রবিন তাকে এলাপাতাড়ি কোপান রবিনসহ কয়েকজন। তার চোয়ালের হাড় ভেঙে গেছে।

সিফাত বলেন, ভাওয়াল কলেজে আমার ভাইকে মারতেছিল। আমি কিন্তু গ্যাঞ্জামে ছিলাম না। রিকসা থেকে নেমে দেখি আমার ভাইকে মারছে। তাই আমার ভাইকে বাঁচাতে সেখানে যাই। তখন রবিন সরদার আমাকে কোপ দেয়।

নিজেদের অধিপত্য বিস্তার করতে গাজিপুরের পাড়া মহল্লায় প্রায়ই হামলা ভাঙচুর করতো রবিন বাহিনী। ২০১৯ সালে তাদের তাণ্ডবের মুখে পড়েন ওয়্যারলেস গেটের বাসিন্দ জয়নাল সরদারসহ তার দুই ভাই। চেনা জানহীন এ লোকদের নির্মমভাবে কোপায় রবিন ও তার দলের সদস্যরা। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বেঁচে ফিরেছেন তারা।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয় আছে বিস্তর অভিযোগ। এইতো ২০২০ সালে ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে নিতে নগরীর জামতলার সোহেল রানার বাড়িতে দলবল নিয়ে তান্ডব চালায় রবিন বাহিনী। কয়েকশ লোক নিয়ে হামলা, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ—কী করেনি সেদিন।

ডিশ ব্যবসায়ি সোহেল রানা বলেন, আমার প্রতিপক্ষ আমার ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে নিতে রবিন বাহিনিকে হায়ার করে তারা। তারা এসে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। শুধু আমার বাড়িতে না বহু মানুষের তাদের হামলার শিকার হয়েছে। এখনো আমরা হুমকির মধ্যে রয়েছি।

এদিন আশপাশের অনেক বাড়িতে হামলা চালায় রবিন বাহিনী। এ ঘটনায় মামলা করেও কোনো প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা। এখনো এলাকায় রবিন-জীবনের নাম শুনলে চমকে উঠেন তারা। গাজীপুরের বাসন থানার মাদবর মার্কেটে প্রায় দিনেই হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ করে রবিন-জীবন বাহিনী। তাদের এমন তান্ডবে মার্কেটি এখন বন্ধের উপক্রম। অনেকেই তাদের ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এদিকে গতবছরের শুরুতে কাখানার পুরাতন মালামল না দেওয়ায় ভেন্টলিন সুয়েটার কারখানায় হামলা চালায় রবিন-জীবন বাহিনী। ভাঙচুর ও মারধর করে কর্মীদের। শুধু তাই নয় হোটেলে ডিমের ঝোল কম দেওয়ায় হোটেল ভাঙচুর করে তারা।

রবিনের বাড়ি শরিয়তপুরে হলেও বেড়ে ওঠেন জয়দেবপুরের শিববাড়ি এলাকায়। ২০১২ এসএসসি পাশ করে গাজীপুরের বদরে আলম সরকারি কলেজে ভর্তি হন। ছাত্রদলের হাত ধরে রাজনীতি শুরু। ওই সময় বিএনপি নেতা হান্নু মিয়ার সঙ্গে চলাফেরা করতে। কিন্তু দল ক্ষমাতায় না থাকায় তেমন সুবিধা করতে পারেননি তিনি।

পরে ২০১৬ সালে ভোল পাল্টে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। পরের বছর কলেজ ছাত্র সংসদের দাবিতে বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর গাড়ি অবরোধ করেন রবিন। পরে কলেজ ছাত্রলগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। তখন থেকেই তার রাজত্ব শুরু হয় কলেজে। গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। কলেজ ও আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রনে নিতে প্রথমে হলের হোস্টেলে নিয়ন্ত্রন নেন রবিন। এহেন কোনো অপরাধ নেই যা তিনি করেননি।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে রাজনীতি না করতে চাইলে ক্লাস রুমের মধ্যে মুখ বেঁধে পেটাতো তারা। এ নিয়ে কলেজ প্রশাসন কখনই তাদের কিছু বলতো না। মূলত প্রশাসনও তাদের ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত থাকতো। কলেজের হোস্টেলে বসেই করতো মাদক ব্যবসা। এর আগে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারও হয়েছেন তিনি। এখন তো সে কলেজের কোনো ছাত্রই না। তবে কলেজে আসলে সব সময় তার সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী থাকতো। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।

রবিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে ৪০টিরও বেশি। তার মধ্যে রয়েছে হত্যা চেষ্টা, ধর্ষণ, অপহরণ, গুম, চাঁদাবাজি, মাদক, ককটেল বিস্ফোরণ সহ গুরুতর অভিযোগে মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তারও হয়েছেন একাধিকবার।

গাজীপুর মেট্রোপলিট কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ রবিন সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এ বার্তা দিতে চাই শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখব আমরা। সন্ত্রসী কর্মকান্ডে যেই জড়িত থাক তাদের আমরা কোনো ক্রমেই ছাড় দেবো না।

কিছু অসাধু পুলিশের সাথে সখ্যতা ছিল রবিনের। যাদের প্রশ্রয়ে দিব্যি অপরাধ করে বেড়াত রবিন। ইতোমধ্যে সেসব পুলিশ সদস্যকে গাজীপুর থেকে বদলি করা হয়েছে। তাছাড়া গাজীপুর জেলার কিছু রাজনৈতিক নেতা তাকে শেল্টার দিয়েছেন। এর মধ্যে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি সরকার বাবু। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রবিন ও তার ভাই জীবন এমন সন্ত্রসী কর্মকাণ্ড চালাত।

তাবে এসব বিষয় অস্বীকার করে সরকার বাবু বলেন, রবিনের কোনো সময় আমি ছায়াদাতা ছিলাম না। তার উত্থন জন্ম চৌরাস্তায়। সেখানে যারা রাজনীতি করে সেখাকার সিনিয়র নেতাদের হাত ধরে তার উত্থান। সে কখনো যুবলীগের সাথে কখনো আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে রাজনীতি করেছে। আমার সাথে সে কখনো রাজনীতি করেনি। আমি মাত্র তাকে ৬ মাস হলো তিনি।

তবে রবিনের এসব অপরাধ প্রকাশ্যে আসার পর তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপ-দপ্তর  সম্পাদক মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

সূত্র: যমুনা টিভি