জাল সনদে ৯ বছর চাকরি করছেন প্রধান শিক্ষক
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় জাল সদন ব্যবহার করে মো. ফারুক হোসেন নামে এক শিক্ষক নয় বছর যাবৎ প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি সদর উপজেলার তিতকাটা পুলের হাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক হওয়ার সময় তিনি বিএড পাসের যে সনদটি ব্যবহার করছেন সেটি আসল নয়।
এ ঘটনায় ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম অভিযোগ তোলেন। তিনি জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেন। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তিতকাটা পুলের হাট নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) হিসেবে যোগদান করেন ফারুক হোসেন। পরে ২০১৪ সালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে গোপন কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই বছরের ১২ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হন। এ সময় যেসব সনদ তিনি দিয়েছেন এতে দেখা যায়, এসএসসিতে দ্বিতীয়, এইচএসসিতে তৃতীয়, বিএ পরীক্ষায় তৃতীয় এবং বিএড দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ৪নং নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষকতায় স্নাতকসহ বিএড পাস হতে হবে। সমগ্র শিক্ষাজীবনে ১টির বেশি তৃতীয় বিভাগ (৩য় বিভাগ/শ্রেণি/সমমানের জিপিএ) গ্রহণযোগ্য হবে না। তবে তিনি এইচএসসি এবং বিএ পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
আরও পড়ুন: শেষ কর্মদিবসে ঘোড়ার গাড়িতে বিদায় নিলেন প্রধান শিক্ষক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফারুক হোসেন ১৯৯৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বিএ পাশ করেন। বিএ পাশ করলেও তিনি বিএড পাশ করতে পারেন বলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট শিটে দেখে গেছে। তার বিএড রোল নং- ১৩৯৮৮, রেজিষ্ট্রেশন নং-১২৩৪৮৯, শিক্ষাবর্ষ ২০০৩-২০০৪। বিএডের রেজাল্টে তিন সাবজেক্টে ফেল দেখানো হয়েছে।
অভিযোগকারী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন জাল সনদ দিয়ে ৯ বছর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেছেন। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় একটা সনদে তৃতীয় বিভাগ থাকতে পারবে। কিন্তু তার (এইচএসসি ও বিএ) দুটি সনদে তৃতীয় বিভাগ রয়েছে এবং বিএড পাসের জাল সনদ দিয়ে ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসে অভিযোগ করা হলেও কোনো প্রতিকার করা হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন জানান, ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা একাধিক তৃতীয় বিভাগে চাকরি করতে পারবেন। তবে বিএড সনদ জালের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন নি।
পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহা. মুজিবুর রহমান জানান, অভিযোগ না দেখে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো না।