মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ সম্পাদকের ২ বছরের কারাদণ্ড
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হওয়া মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে আসামীদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মামলার রায় পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হেফাজতের তান্ডবের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আদিলুর ও এলানের সংগঠন অধিকার বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ্ন করেছে।
এদিকে, তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলার রায় শুনতে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার পর্যবেক্ষকরা।
এর আগে, গত ২৪ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক। তবে সেদিন তা প্রস্তুত না হওয়ায় রায় ঘোষণা পিছিয়ে আজকের দিন ধার্য করেন বিচারক। জামিনে থাকা দুই আসামি আদিলুর ও এলান আদালতে উপশিত আছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের ওই সমাবেশে পুলিশের উপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ মে সকালে পুলিশসহ ১১ জন মারা যান। অথচ অধিকারের ওয়েবসাইটে একই বছরের ১০ জুন ৬১ জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবদনে বিভিন্ন সময়ে নাশকতার পুরনো কিছু ছবিও যুক্ত করা হয়।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে উস্কানি ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে আসামিরা ২০০৬ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অপরাধ সংঘটন করেছেন। এ অপরাধের জন্য ৫৭(২) ধারায় সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, আদিলুর রহমানসিহ দুজনের মামলার বিচার হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায়। এই আইনের সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করে অপরাধ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি আইন অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ সাজাই হবে।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভুঁইয়া আশা করছেন খালাস পাবেন তারা। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আশা করি রায়ে দুইজনই বেকসুর খালাস পাবেন। কারণ আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষও অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।