‘স্বর্ণার কবরের লগে আমারে কবর দিয়েন’ চিরকুট লিখে যুবকের আত্মহত্যা
স্ত্রী মৃত্যু ৩৫ দিনের মাথায় নারয়ানগঞ্জে এক যুবক চিরকুট লিখে আত্মহত্য করেছে বলে জানা গেছে। চিরকুটে স্ত্রীর কবরের পাশে কবর দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। লুৎফর রহমান জনি (৩৪) নামের ওই যুবক নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাউজিং এলাকার মোহাম্মদ আউয়াল মিয়ার ছেলে। আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক হুমায়ুন ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, স্ত্রী মৃত্যুর পর থেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন জনি। নিজের শোয়ার ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। এরপর পুলিশে খবর দিলে দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘরে টেবিলের ওপর রাখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়েছে পুলিশ। সেই চিরকুটে লেখা রয়েছে—‘আব্বা আপনে আমারে অনেক ভালোবাসেন। আমি ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আপনারে অনেক কষ্ট দিছি। পারলে আমারে মাফ করে দিয়েন। মাফ না করলে আমি মরেও শান্তি পাইতাম না। আমার শেষ ইচ্ছাটা রাখার চেষ্টা কইরেন—স্বর্ণার পাশের কবরটা খালি আছে, সেখানে আমারে কবর দিয়েন।
‘ঝামেলা হইলে ফরিদ মাওলানা কাকা কবরস্থানের কমিটিতে আছে, তার লগে কথা কইয়া স্বর্ণার কবরের লগে আমারে কবর দিয়েন। আমার শোয়াইবরে (ছেলে) দেখে রাইখেন। আব্বা, আমি অনেক চেষ্টা করছি স্বাভাবিকভাবে থাকার। কিন্তু স্বর্ণারে ছাড়া ১টা দিন এক বছরের মতো লাগে। তার মৃত্যুর এই ৩৫ দিন আমার কাছে ৩৫ বছর মনে হইছে। আমারে আপনে মাফ কইরা দিয়েন আব্বা। ‘মা, আপনেও আমারে মাফ কইরা দিয়েন—আপনার যত্ন নিতে পারি নাই। আমি তোমাগো অনেক ভালোবাসি আব্বা-মা।’
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোজাম্মেল হক জানান, ওই যুবক একটি চিরকুট লিখে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।