কন্যা সন্তানের জন্ম দিলো চতুর্থ শ্রেণির সেই শিশুটি
ধর্ষণের শিকার নাটোরের গুরুদাসপুরের ৪র্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতকটির জন্ম দিয়েছে ১১ বছরের শিশুটি। সন্তান জন্মের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শ্রাবনী রায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নারগিস তানজিমা ফেরদৌস ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, স্কুল ছাত্রীর বয়স কম থাকায় মা ও নবজাতককে বাঁচানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ রয়েছে।
নবজাতককে কোলে নিয়ে শিশুটির চাচি অভিযোগ করেন, নবজাতক জন্ম নিয়েছে ঠিকই, তবে পরিচয় নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। পিতা-মাতা হারা শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় সম্পর্কে তার প্রতিবেশী দাদা অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ (৫৫) দ্বারা। অভিযুক্ত জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে পরিবারে। কারণ জাহিদুল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে হুমকি দিচ্ছে তার স্বজনেরা।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার পর অভিমানে গলায় ফাঁস নেন জাবি ছাত্রী
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, হাসপাতাল এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগি শিশুর পরিবারকে সব ধরণের আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ১০ মাস আগে ভুক্তভোগী ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটিকে প্রতিবেশী দাদা জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদুল খাঁ তার ভ্যানে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন জাহিদুল। ঘটনার সাত মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন হলে বিষয়টি চাচির নজরে আসে। তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে শিশুটি সব খুলে বললে চলতি বছরের ১৮ জুন শিশুটির দাদি বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পরে গত ২৫ আগস্ট রাতে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলামকে (৫৮) গ্রেপ্তার করে র্যাব।