২৬ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৫

এমপিকে অপহরণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল  © সংগৃহীত

নেত্রকোনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে অপহরণের ঘটনায় পূর্বধলা থানায় মামলা হয়েছে। গত বুধবার (২৩ আগস্ট) এমপির স্ত্রী রওশন হোসেন বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) এ তথ্য জানান পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজ বাড়ি কাজলা থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় অপহরণের শিকার হন এমপি ওয়ারেসাত। পরে ২৭ মার্চ বিকেলে এমপিকে ধানমন্ডির এক বাসা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- পূর্বধলা উপজেলার পূর্ব মৌদাম গ্রামের নাদিয়া আক্তার, নাদিয়ার ছোট ভাই পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাইফ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন হাসিফ, এমপি বেলালের দুই পিএস হিসেবে পরিচিত ফেরদৌস আলম ও কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, কলেজ শিক্ষক নাদেরুজ্জামান স্বপন, রতন পাল, ছাত্রলীগ কর্মী শাহ আলীম এবং এমপি বেলালের গাড়ি চালক শফিকুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি কাজলা থেকে আসামিরা এমপিকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে এমপির বাসভবনে না নিয়ে আরেক জায়গায় আটকে রাখে। আসামিরা এমপির স্ত্রীকে জানান, তিনি বিদেশ চলে গেছেন। কিন্তু এমপির স্ত্রী তাদের কথা বিশ্বাস না করে খোঁজা অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে আসামিরা এমপির স্বাক্ষর জাল করে জাল তালাকনামার ফটোকপি মামলার বাদির (এমপির স্ত্রী) কাছে পাঠান। এমপি ও এমপির পরিবারকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আসামিরা জাল কাবিননামা ডাকযোগে বিভিন্ন অফিসে পাঠায়। বিভিন্নভাবে খোঁজার এক পর্যায়ে গত ২৭ মার্চ বিকেলে এমপিকে ধানমন্ডির এক বাসা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ ছাড়া এমপি ও স্বাক্ষীদের মাধ্যমে জানা যায়, আসামিরা আটক অবস্থায় এমপির ব্যক্তিগত ফোনের মাধ্যমে চাকরি দেবে প্রতিশ্রতি দিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়। গত ২৮ মার্চ এমপিকে চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া নিয়ে গিয়ে সুস্থ করে ১১ আগস্ট দেশে এসে মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে মামলায় অভিযুক্ত আসামি নাদিয়া আক্তার দাবি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে করা মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। নাদিয়া আরও বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে আমি খুবই বিব্রত। এমপি বেলালের সঙ্গে আমাদের পরিবারের সখ্যতা রয়েছে ঠিক। আমার ভাইকে তিনিই নেতা বানিয়েছেন। এর বাইরে আমার আর কিছু জানা নেই।’

ফেরদৌস দাবি করে বলেন, ‘এজাহারে যে সময়ে এমপিকে অপহরণ ও জিম্মি করে রাখার কথা বলা হয়েছে সে সময়ে তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।’

পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এমপির স্ত্রীর করা এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছি। এতে অপহরণ, জিম্মি করে রাখা, বিশ্বাস ভঙ্গ করে প্রতারণা, জাল কাবিননামা ও জাল তালাকনামা তৈরিসহ একাধিক অভিযোগ সম্বলিত ধারার উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।