হিরো আলমের ওপর হামলা, ইইউ ও ১২ দেশের যৌথ বিবৃতি
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ১২টি দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। এর পাশাপাশি পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৯ জুলাই) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এ তথ্য জানায়। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলো হলো- কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নরওয়ে, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এসব দেশের পক্ষে দূতাবাস ও হাইকমিশনসমূহ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলমের (যিনি হিরো আলম নামে পরিচিত) ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার দাবি জানাই। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। এক টুইট বার্তায় এ উদ্বেগের কথা জানান তিনি।
টুইট বার্তায় সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করার আহ্বান জানান গোয়েন লুইস। সোমবার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের শেষ সময়ে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্রের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে হিরো আলমের ওপর হামলার প্রসঙ্গ। এ সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার যেকোনো প্রতিবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে এবং সহিংসতার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য উৎসাহিত করি।
বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে- এমন প্রত্যাশার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যক্তরাষ্ট্র নির্বাচন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।
এদিকে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস। এ ছাড়া হামলার ঘটনাকে নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থি ও মানবাধিকারের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।
এ ছাড়া হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি)। এর মধ্যে গ্রেপ্তার দুজনকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে দিন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল কেন্দ্রের সামনে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হিরো আলমের ব্যক্তিগত সহকারী সুজন রহমান শুভ বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।