১৮ জুন ২০২৩, ১০:১৬

কারামুক্ত হলেও নেই যাওয়ার জায়গা, ৩২ বছরেও দেখতে আসেননি কেউ

জল্লাদ শাহজাহান  © ফাইল ছবি

আলোচিত কারাবন্দী জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া (৭৩) অবশেষে মুক্তি পাচ্ছেন আজ। রবিবার (১৮ জুন) ৩২ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পাচ্ছেন তিনি। এদিন সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হবেন। কারামুক্ত হওয়ার খবরে তিনি খুশি হলেও থাকার জায়গা নিয়ে অনেকটা উদ্বিগ্ন। এর আগে তার এ কারাভোগের ‍পুরো সময়ে কেউ তার সঙ্গে দেখাও করতে আসেননি। নেননি কোনো খোঁজও।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডিআইজি প্রিজন্স ফজলুল হক সংবাদমাধ্যমকে জল্লাদ শাহজাহানের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শাহজাহান ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদীর পলাশ থানার ইছামতী গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত। তিনি ফাঁসি দিয়েছেন কুখ্যাত বাংলা ভাই, খুনি এরশাদ শিকদার, মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ ২৬ জনকে।

কারা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবিধান অনুসারে শাহজাহানের সাজা ১০ বছরের কিছু বেশি সময় কমানো হয়েছে। যেহেতু শাহজাহানের সঙ্গে কেউ কখনো দেখা করতে আসেনি, তাই কারা কর্তৃপক্ষ তার ওই ২ মামলার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আরও পড়ুন: ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো জল্লাদ শাহজাহানের মুক্তি আজ

সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, শাহজাহান রোববার সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হবেন। তিনি জীবনের একটা বড় অংশ জেলে কাটিয়েছেন। একদিকে কারামুক্ত হওয়ার খবরে তিনি খুশি, আবার যাওয়ার কোনো জায়গা না থাকায় তিনি উদ্বিগ্নও।

সুভাষ জানান, কারা কর্তৃপক্ষ শাহজাহানকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, যাতে তিনি তার বাকি জীবন সুন্দরভাবে কাটাতে পারেন। শাহজাহান বিয়ে করেনি এবং তার বাবা-মাও বেঁচে নেই। তারপরও তিনি কারাগার থেকে বের হওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে যেতে চান জানিয়ে সুভাষ বলেন, তিনি (শাহজাহান) আমাদের বলেছিলেন যে বাকি জীবন পৈতৃক গ্রামে কাটানোর ইচ্ছা তার।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় শাহজাহানের ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে এসে নামে। দুটি মামলায়পাঁচ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৩২ বছর পর ১৮ জুন মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পাবেন জল্লাদ শাহজাহান।

সহযোগী জল্লাদ হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে শাহজাহান কয়েদি থেকে তার জল্লাদ জীবনের সূচনা করেন। এরপর কারাগারে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় আসলেই ডাক পড়তো তার। টানা আট বছর এই কাজ করার পর কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেন।