২৭ মে ২০২৩, ০৮:৪৩

ঢাবির হলে পাঁচ বিড়াল ছানা হত্যা, পাশে কাঁদছে মা

হত্যা করা বিড়াল ছানা ও তাদের মা  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের দু‘টি হল থেকে পাঁচটি মৃত বিড়াল উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুরপাড় থেকে চারটি ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার হয়। এটি জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বিড়ালগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এভাবে বিড়াল হত্যায় জড়িতদের মানবিকতাবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। তবে এতে জড়িত সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

যদিও একটি কাগজ ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। তাতে লেখা, ‘হলের আবাসিক ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, রোববার বিড়াল ধরা হবে। ছাত্রীদের সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্দেশক্রমে হল কর্তৃপক্ষ।'

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়েছিল বলে একাধিক ফেসবুক পোস্টে সমালোচনা করা হয়েছে। তবে হল প্রাধ্যক্ষ নিলুফার পারভীন বলেছেন, এমন নোটিশ দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়েঅ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার টিম অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি নামে একটি ফেসবুক পেজে কয়েকটি পোস্ট করা হয়েছে। সর্বশেষ পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘এখনো আমরা হেরে বসে আছি! কারণ এই ছোট জানগুলোর নৃশংস হত্যার বিচার আমরা কারো কাছে দিতে পারিনি যে। এ সাইকোপ্যাঁথ যদি ঐদিকের কোন এক অন্ধকার রাস্তায় কোন আপুর ক্ষতি করে তখন নিশ্চয়ই বাকিদের টনক নড়বে?’

আরও বলা হয়েছে, ‘বঙ্গবন্ধু হল ও এর আশেপাশের রাস্তায় আপুরা সাবধানে থেকেন। এ ছোট বাচ্চাগুলোকে যে বা যারা এভাবে গলা কেটে মারতে পারে, তারা আর যাই হোক মানুষ না! এ হত্যাকান্ড নিয়ে কারো কাছে কোন ইনফো থাকলে দয়া করে আমাদের ইনবক্স করুন। আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই।’

এর আগে একটি পোস্টে লেখা হয়, ‘আমাদের মাত্র একমাস সময় দেওয়া হয়েছে! এর মাঝে বঙ্গমাতা হল ও কুয়েত মৈত্রী হলের প্রায় ২০টি মা বিড়ালকে অতিদ্রুত স্পে করিয়ে দিতে হবে এবং হলের অসংখ্য ছোট বাচ্চাকে দ্রুত এডপ্ট দিতে হবে। যেখানে বর্তমানে প্রতিটি বিড়ালকে স্পে করাতে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার সহ, ট্রান্সপোর্ট সহ আমাদের খরচ ৩৫০০ টাকা। জানিনা কিভাবে সম্ভব তবুও আমরা চেষ্টা করে যাবই। এ জন্য আর্থিক সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।

 

আমিরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী দুটি ছবি সংযুক্ত করে এ ঘটনাটি ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় একটি গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানের একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বিড়াল গভীর রাতে মৃত ছানাগুলোর পাশে বসে আছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিড়ালছানাগুলোর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। 

তিনি লিখেছেন, কোথায় গেলো আজ মানবতা নামের সেই গুণটি যা মানুষকে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে? ৪টি বিড়ালছানা জবাই করে পুকুর পাড়ে রেখে গেলো! মা বিড়ালটি এসে রাত ৪টায়ও নিজেকে সামলে নিতে পারছেনা বলে বার বার এসে তার মৃত ছানাদের পাশে অঝোরে কান্না করছে! এ কেমন সাইকো? কী অপরাধ ছিল এই নিষ্পাপ প্রাণীর?

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যায়ের কবি জসীম উদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহিন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিড়ালছানাগুলো যে জসীমউদ্দিন হলের কিনা তা জানি না। তবে এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনার সাথে কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।