১৮ মে ২০২৩, ২২:৩০

অপহরণের ১০ দিন পর কলেজছাত্রের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার

নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয়  © সংগৃহীত

অপহরণের ১০দিন পর একটি বিল থেকে ফারাবি আহমেদ হৃদয় (২২) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান র‌্যাব-৪। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তাফ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে আশুলিয়ার মোজারমিল এলাকার একটি বিল থেকে হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মানিকগঞ্জের সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের ময়েজ হোসেন ওরফে পরাণ (২২), বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পী (২৫) ও মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার তালখড়ির হৃদয় খান ওরফে আকাশ (২০)।

বৃহস্পতিবার র‌্যাব-৪ এর পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার আসামিরা ও ঘটনার মূলহোতা পরান এবং ভুক্তভোগী হৃদয় একই এলাকার বাসিন্দা এবং পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো। হৃদয়ের বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তি। গ্রেপ্তার আসামি পরান ও তার সহযোগী সুমন মিয়া, আকাশ এবং পলাতক শাহীন আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিলো।

র‌্যাব আরও জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৮ মে বিকেলে আসামিরা ভুক্তভোগীকে আড্ডা দেয়ার কথা বলে সুকৌশলে আকাশের বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামিরা হৃদয়কে জোরপূর্বক রশি দিয়ে বেঁধে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার বাবাকে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে হৃদয়ের গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে একই দিন সন্ধ্যায় মরদেহ বস্তায় ভরে রিকশাযোগে মোজারমেল এলাকায় একটি বিলে ফেলে দেয়। পরে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়।

পরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় কলেজ ছাত্র হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৪ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রহমান জানান, একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত ভিকটিকে উদ্ধার ও আসামি গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভুক্তভোগীর মরদেহ উদ্ধারপূর্বক উক্ত অপহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত পরান, বাপ্পি ও আকাশকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।