১১ মে ২০২৩, ০৮:৩২

বাসায় ঢুকে কলেজছাত্রীকে খুন, সেই শিক্ষক গ্রেপ্তার

নিহত কলেজছাত্রী ও গ্রেপ্তারকৃত গৃহশিক্ষক  © সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারকে (২১) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। নিহত কলেজছাত্রীকে অই শিক্ষক বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তা প্রত্যাখ্যান করায় তিনি মঙ্গলবার ঘরে ঢুকে রাবেয়াকে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যান বলে ওই ছাত্রীর পরিবার জানায়। রাবেয়াকে বাঁচাতে এসে তার মা ও ছোটবোনও আহত হন।

বুধবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৯টায় টাংগাইলের ভূঞাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৫)। বাবা-মার সঙ্গে মহানগরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় থাকতো।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম রাবেয়া আক্তার (২১)। সে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঘটনার সময় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)।

গাজীপুর মেট্রো সদর থানার এসআই আবু সাঈদ জানান, আবদুর রউফ তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতের কোরআন শিক্ষার জন্য অভিযুক্ত সাইদুল ইসলামকে গৃহশিক্ষক হিসেবে রাখেন। কোরআন পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়ার সুবাদে বড় মেয়ে রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাইদুল। পারিবারিকভাবে প্রস্তাবে রাজি না হয়ে তাকে পড়ানোর জন্য নিষেধ করা হয়। 

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুল বিয়ের জন্য চাপ দেয় এবং বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে। বিষয়টি অভিযুক্তের বাবা-মা’কে জানালে তারা তাকে ফিরিয়ে নেয়। রাবেয়া লেখাপড়ার পাশাপাশি সম্প্রতি মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি নেন। তার কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সাইদুল।

আরও পড়ুন: বাসায় ঢুকে কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত মা আইসিইউতে

তিনি আরও জানান, বিষয়টি বাবা-মাকে জানালে উত্ত্যক্ত না করতে পুনরায় নিষেধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির প্রধান গেট খোলা দেখতে পেয়ে ঘরে ঢুকে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথায়, গলায়, পায়ে ও হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। তার চিৎকারে মা ও ছোট বোন দৌড়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে।

পরে প্রতিবেশী মাহমুদুল ইসলাম তাদেরকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৮টায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাবেয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়। ঘটনাটি বেশ আলোচিত হয় বলে র‌্যাবও আসামি ধরতে অভিযানে নামে।