০৬ মে ২০২৩, ২২:৩৬

সংঘর্ষ এড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান, উদ্ধার ৩ হাজার দেশীয় অস্ত্র

সংঘর্ষ এড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান, উদ্ধার ৩ হাজার দেশীয় অস্ত্র  © সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বিভিন্ন ঘটনায় ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। গত ১০-১২দিন ধরে নাসিরনগর উপজেলার ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এ সময় ৮ জনকে আসামি করে থানায় ৩টি মামলা হয়েছে। দেশীয় অস্ত্র তৈরি বন্ধ করতে কামারদের নিষেধ করা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার।

নাসিরনগর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রায়ই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। গত ঈদুল ফিতরের দিনও উপজেলায় বিভিন্ন পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ প্রতিরোধে গত ১০-১২দিন ধরে নাসিরনগর থানা পুলিশের চালানো অভিযানে প্রায় ৩ হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কাতরা, সড়কি, বল্লম, এককাইট্টা, পল, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ডেকার, চাকু, লাঠি, টেঁটা, ফলা ও চল।

উপজেলার যেসব গ্রাম থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে নূরপুর, হরিপুর, নরহা, চিতনা, ধরমন্ডল, শংকরাদহ, গোকর্ণ, কুন্ডা, কুন্ডা জেলে পাড়া, শ্রীঘর, চাপরতলা, ভোলাউক, উরিয়াইন, আতুকুড়া, মুকবুলপুর ও পূর্বভাগ আছে।

নাসিরনগর থানা সূত্র আরও জানায়, শনিবার সকাল ১১টায় দেশীয় অস্ত্র তৈরি বন্ধ করতে নাসিরনগর থানায় স্থানীয় কামার ও বাঁশ ব্যবসায়ীদের ডেকে আনা হয়। নাসিরনগর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সভায় ৩৮-৪০জন কামার ও ১৬ জন বাঁশ ব্যবসায়ী উপস্থিত হন। কৃষিকাজ ও নিত্যপ্রয়োজনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ছাড়া যেন কামাররা রামদা, বল্লম, টেঁটাসহ ঝগড়া বা স্থানীয় সংঘর্ষে ব্যবহৃত হয় এমন দেশীয় অস্ত্র না তৈরি করেন সে বিষয়ে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেন ওসি। একইসঙ্গে, সভায় বাঁশের অস্ত্র তৈরির জন্য কারেও কাছে যেন বাঁশ বিক্রি না করা হয়ে সেই পরামর্শ ও নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

সভায় কামার ও বাঁশ ব্যবসায়ীদের ঝগড়ার জন্য রামদা, বল্লম, টেঁটা, চাইনিজ কুড়াল ইত্যাদিসহ দেশীয় অস্ত্র তৈরির জন্য কোনো অর্ডারে এলে পুলিশকে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ এড়াতে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অন্তত ২৫টি গ্রামে এই অভিযানে ৩ হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কামার ও বাঁশ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শনিবার সভা করেছি। দেশীয় অস্ত্র তৈরির বিষয়ে তাদের নিষেধ করা হয়েছে। যাদের ঘরে অপ্রয়োজনীয় দেশীয় অস্ত্র পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা অটুট রাখতে এই নিয়মিত অভিযান চলবে।