২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৪৯

নিজের তিনটি পেজ হারিয়ে নিঃস্ব স্বপন আহমেদ

ইউটিউবার স্বপন আহমেদ  © সংগৃহীত

‘মাসুদ রানা’ খ্যাত স্বপন আহমেদ মূলত সমসাময়িক আলোচিত বিষয়গুলোর উপর নিজস্ব চিন্তাভঙ্গিতে ভিডিও তৈরি করে থাকেন। এডিটিংয়ের মাধ্যমে কখনো নায়ক সালমান খানের সাথে সিনেমার দৃশ্যে, আবার কখনোবা মাসুদ রানা হয়ে প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে হাজির হন আয়োজক আর বিচারকদের অসঙ্গতির প্রতিবাদ জানাতে।

প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এমন বিনোদনমূলক ভিডিও মানুষকে বিনোদন দিচ্ছেন। ‘২০১৯ সালে মাসুদ রানা’— শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোডের কয়েকঘণ্টায় ভাইরাল হয়ে যায় সে ভিডিও। পরে স্বপনও মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন মাসুদ রানা নামে। সম্প্রতি তিনি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন। তিনি নিজের তিনটি পেজ হারিয়ে এখন অনেকটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

গেল শুক্রবার (২১ এপ্রিল) হ্যাকিংয়ের কবল থেকে বেঁচে যাওয়া নিজের একমাত্র প্রোফাইল থেকে স্বপন প্রথম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘হয়তো আমার আইডি থেকে এটাই শেষ পোস্ট হতে পারে। আমার কথাগুলো হয়তো আপনাদের কাছে আর নাও পৌঁছাতে পারে।’’

কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ইউটিউবারদের উপদেশ তিনি লিখেন, ভাই! যে কম্পিউটারে তোমার ইউটিউব ও ফেসবুক লগইন করা আছে, সেই পিসিতে ভুলেও কোন অ্যাপ্স ডাউনলোড কইরো না।

আরও পড়ুন: ইউটিউবে ভিউ বাড়াবেন যেভাবে

স্বপন শুরুর দিকে ভিএফএক্স এবং ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতেন। তারপর গ্রিনস্ক্রিনে ধারণ করা দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তনের কাজ শেখার মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে পুরোদমে ইউটিউবিং শুরু করেন। স্বপনের প্রতিটি ভিডিও অল্পসময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি এখন তিনি ধর্মীয় ও প্রতিবাদী কনটেন্টে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।

স্বপনের হারানো তিনটি পেজ হলো- তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ‘স্বপন আহমেদ’ (২৫ লাখ ফলোয়ার), ‘স্বপন আহমেদ ফ্যান্স’ (৫ লাখ ফলোয়ার), ‘একটা গ্যামিং প্যাজ’ (২ লাখ ফলোয়ার)।

হ্যাকিংয়ের কথা জানিয়ে এক সাক্ষাৎকারে স্বপন জানিয়েছেন, আমার সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্টগুলো এমনভাবে প্রটেক্ট করা ছিল যে, আমি যদি কাউকে পাসওয়ার্ড দিয়েও দেই তারপরেও সে সেখানে লগইন করতে পারে না। আমার যতদূর মনে হয় আমার পিসি হ্যাক করা হয়েছিল। যার ফলে আমি পিসিতে বসে যা যা করতাম হ্যাকার সবকিছু দেখতে পারতো।

একটি সফটওয়্যার ডাউনলোডেই যেন তার কাল হলো। তিনি বলেন, ‘‘আমি এটিও নিশ্চিত যে আমি কোন লোভে পড়ে কোনো লিংকে ক্লিক করে অথবা স্পনসারশিপের জন্য কোনো লিংকে ক্লিক করে এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। কারণ এই বিষয়টাতে আমি অনেক আগে থেকেই প্রফেশনাল। আমার যতদূর মনে হয় কোন সফটওয়্যার ডাউনলোড করার মাধ্যমে আমার সাথে এমনটি ঘটেছে।’’

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের এই মেধাবী তরুণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করছেন ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষে। ভবিষ্যতে ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেই কাজ করার ইচ্ছে ছিলো তার। কিন্তু এখন মাঝপথে অনেকটা থমকে গেছে তার জীবন। নিজের হারানো পেজগুলো উদ্ধারে তিনি এখন কাজ করছেন।

স্বপন বলেন, আমি ফেসবুক টিমের সাথে কথা বলেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছে,এটা ফেরত আসতেও পারে আবার নাও আসতে পারে। মূল পেজটিতে আমি অনেক ধরনের ইসলামিক ভিডিও, প্রতিবাদী ভিডিও আবার এডিটের মাইরে বাপ ভিডিও আগে করতাম। এটি এখন করি না; এখন বেশিরভাগ ইসলামী এবং প্রতিবাদী ভিডিওতে মনোযোগ দিয়েছিলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।