মার্চে সড়কে প্রাণ গেছে ৪২ জন শিক্ষার্থীর
দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় গত মার্চ মাসে ৪৮৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৫৩৮ জন। এতে আহত হয়েছেন এক হাজার ১৩৮ জন। তাদের মধ্যে ৪২ জনই স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। ১৫২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত এবং ৯৭ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সই করা এক বিবৃতিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সংগঠনটি জানিয়েছে, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭৯ জন চালক, ১০১ জন পথচারী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১২২ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ১২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯০ জন নারী, ৫০ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন আইনজীবী ও ১ জন প্রকৌশলী এবং ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন, বিভিন্ন পরিবহনের চালক ১৪০ জন, পথচারী ৯৩ জন, নারী ৬৭ জন, শিশু ৩৭ জন, শিক্ষার্থী ৪২ জন, পরিবহন শ্রমিক ২৫ জন, শিক্ষক ৯ জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ৬ জন, চিকিৎসক ৩ জন, পুলিশ সদস্য তিনজন, সেনাসদস্য তিনজন, আনসার সদস্য দু’জন, সাংবাদিক একজন, আইনজীবী দু’জন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৫ জন নেতাকর্মী রয়েছেন।
এছাড়া রেলপথ দুর্ঘটনায় ৪৭ জন, নৌপথে দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন। অর্থাৎ গেল মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনায় ৫৯২ জন নিহত হয়েছেন। মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ ঘটেছে গাড়িচাপায়।
মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ গাড়ি চাপা, ১৫ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ৪২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ বিবিধ কারণ এবং ১ দশমিক ২৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ।
আরও পড়ুন: ঢাবির নতুন প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মার্চে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ০৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৩ দশমিক ২০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৫ দশমিক ১১ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া মোট দুর্ঘটনার ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরে, ১ দশমিক ২৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরেও ১ দশমিক ২৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনা কারণ হিসেবে চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে গাড়ি চালানো, বেপরোয়া গতি ও বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, চালকের কর্মঘণ্টা ও বেতন সুনির্দিষ্ট না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করার কথা বলছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।