ছাত্রলীগ নেতার রগ কাটল যুবলীগের কর্মীরা
ফেনীর সোনাগাজীতে এক ছাত্রলীগ নেতার পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া হামলায় আরও দুজন আহত হন। রবিবার রাতে উপজেলার মধ্যম আহম্মদপুর গ্রামের বাঁশতলায় এ ঘটনা ঘটে।
মামলার নথির বরাতে পুলিশ জানায়, হামলা চালিয়ে সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়ের পায়ের রগ কাটা হয়। এছাড়া তার ছোট ভাই নয়ন উদ্দিন চৌধুরী (১০) ও মোশারফ হোসেন (৪০) নামের এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। হৃদয় ও নয়নকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও মোশারফ হোসেনকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়েছে। রাগ কাটার অভিযোগে করা মামলায় নেজাম উদ্দিন মাস্টার ও মো. নাঈম নামের এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোনাগাজীর চরডুব্বা গ্রামের যুবলীগ কর্মী আরিফ হোসেন এবং সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০-২২ জন দলবদ্ধ হয়ে এক দোকান কর্মচারীর উপর হামলার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। এ পথে ওই ইউনিয়ন কমিটির যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন তারাবীর নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছিলেন। সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নিবৃত করার চেষ্টা করলে মোশারফের উপর হামলা চালায় দলবদ্ধরা।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, মোশারফের সঙ্গে ছিলেন একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়। সংঘবদ্ধ দলটি হামলা চালিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয়।
হৃদয়ের চিৎকারে তার ছোট ভাই নয়ন এগিয়ে গেলে তাকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় আহত মোশারফ হোসেনের ভাই সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন: যুবলীগ কর্মী আরিফ হোসেন, তার ভাই সাইফুল ইসলাম, নেজাম উদ্দিন মাস্টার, মো. নাঈম, রিফাত, অন্তর, আরাফাত, মেজবাহ, রাহাত, মো. আরমান, আমজাদ হোসেন, মো. হায়দার, মো. মিরাজ।
এদিকে, এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের চরডুব্বা গ্রামের কামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে পাল্টা মামলা করেন।
এ মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন: ছাত্রলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, মো. সাইমুন, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন, মো. তামিন, মো. সাগর, মো. ইমন, মো. সাহেদ, তাওহীদ, মো. সিয়াম, আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন ওরফে বারিস্টার ও এমরান।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হিরণ বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। দু’পক্ষেই আমাদের দলের লোক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জহিরুল আলম জহির বলেন, ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।তাকে পাল্টা মামলায় আসামি করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। হামলাকারীরা চরডুব্বা ও চরএলাহি থেকে দলবদ্ধভাবে গিয়ে হামলা করেছে। এতে পাল্টা মামলায় আহতদের আসামি করা ঠিক হয়নি।
সোনাগাজীর সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) তাসলিম হুসাইন বলেন, তদন্তে আহত ছাত্রলীগ নেতা নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।