বিয়ের দাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে জনসম্মুখে গণধোলাই দিলেন প্রেমিকা
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিয়ে না করায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় লোকজন নিয়ে জনসম্মুখে গণধোলাই দিয়ে টেনে হিঁছড়ে থানায় নিয়ে যান এক তরুণী।
তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেছেন তারা। পরে বিয়ে না করেই ওই তরুণীর নগদ অর্থ হাতিয়ে লাপাত্তা হন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা।
এমতাবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পেয়ে আটক করে গণধোলাই দেন ওই তরুণী। আজ বুধবার (২২ মার্চ) এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদ দেখা যায়নি আজ, শুক্রবার থেকে রোজা শুরু
অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম শাওন ঈশ্বরদী পূর্বটেংরি ঈদগাহ রোড এলাকার মো. শহীদুল ইসলামের ছেলে এবং ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আর ভুক্তভোগী তরুণী রুপা খাতুন ঈশ্বরদীর পার্শবর্তী জেলা নাটোরের সিংড়া এলাকার বাসিন্দা এবং ঈশ্বরদী ইপিজেডের একজন কর্মী।
রুপার দাবি, ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির সুবাদে শাওনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। এক পর্যায়ে দুজনে ঘুরতে বের হলে দাশুড়িয়ার একটি পেপার মিলে রুপাকে ধর্ষণ করেন শাওন। রুপা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিলে শাওনের বাবা-মা শাওনের সঙ্গে রুপার বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর তাদের অবাধ মেলামেশা চলতে থাকে। রুপাকে পরে শাওনের বাবা-মা তাদের ঈদগাহ রোডের বাড়িতে নিয়ে তোলেন। সেখানেও বিয়ে ছাড়াই ছেলে ও মেয়েকে অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দেন তারা। দুমাস পর ছাত্রলীগের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রুপাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় শাওনের পরিবার।
আরও পড়ুন: আরও ৩ বিভাগে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
রুপা দাবি করেন, তিনি আবারও থানায় অভিযোগ করতে চাইলে শাওন তাদের বিশেষ মুহূর্তের সময় ধারন করা ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সেই হুমকি আর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রুপার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়ে লাপাত্তা হন শাওন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেয়েটি বিয়ের দাবিতে শাওনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এসময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে শাওন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন মেয়েটি ও স্থানীয় লোকজন শাওনকে ধরে গণধোলাই দেয় এবং পরে তাকে নিয়ে থানায় যায় মেয়েটি। তবে সেখানে দুজনের মধ্যে কেউই লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় ঈশ্বরদী থানা পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়েরই কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। সঙ্গত কারণেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।