১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:২৯

ভিডিও দেখে বাইক চুরি শেখেন ঢাবি ছাত্র

মোঃ সাইমুন, সাকিব  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রেজা মোঃ সাইমুন ওরফে তরুণ (৩৫)। চতুর্থ বর্ষে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হলে তার জীবনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিছুদিন ব্যান্ড দলে থেকে স্টেজ শো করলেও ভাগ্য পরিবর্তন না হওয়ায় মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। এতেও জীবনের কোনো উন্নতি না হওয়ায় ইউটিউবে ভিডিও দেখে জড়িয়ে পড়েন মোটরসাইকেল চুরির মত পেশায়। 

শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে মিরপুর মডেল থানার রাইনখোলা বড় মসজিদের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।

এসময় তার সহকারী হিসেবে গ্রেফতার হন সাদমান সাকিব (২৯)। অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোটরসাইকেল চুরির মোট সাতটি মামলা রয়েছে। সাকিব আর্কিটেকচারাল ভিজুয়ালাইজেশন বিষয়ে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অধীনে ডিআইপিটিআই ধানমন্ডি ৩২ ক্যাম্পাস থেকে ২০১৫ সালে ডিপ্লোমা করেন।

ঢাবিতে পড়েও যেভাবে চুরি পেশায় যুক্ত হলেন তরুণ
অভিযুক্ত রেজা মোঃ সাইমুন ওরফে তরুণ মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক। ঢাবিতে প্রথম বর্ষ থেকেই সে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বারবার সতর্ক করা হলেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০১৫ সালে অনার্স চতুর্থ বর্ষে বহিষ্কৃত হন।

এরপর পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ব্যান্ড দলে কাজ করে বেশি উন্নতি করতে না পারলে তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান জীবীকার খোঁজে। কিন্তু ভাগ্যে পরিবর্তন না আসলে আবারও দেশে ফিরে আসেন তিনি। পরে পেশা পরিবর্তন করে ২০২০ সালে ইউটিউব থেকে চুরিবিদ্যা শিখে বিভিন্ন জায়গায় মোটরসাইকেল চুরিতে জড়িয়ে পড়ে। ঢাকা ও আশেপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থান থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে মুন্সিগঞ্জে বিক্রি করতেন। তিনি ইতিপূর্বে দুইটি মামলায় সাজা ভোগ করেন।

আরও পড়ুন: আর কখনও ক্যাম্পাসে ফেরা হবে না ঢাবি ছাত্রী সুইটির

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, "তরুণের ভাষ্যমতে সে ঢাবিতে থাকাকালে তার ছাত্রত্ব বাতিল হলে পড়াশোনা ছেড়ে দেয় সে। পরে কিছুদিন ব্যান্ড দলে গান গেয়ে বেড়ালেও মালেশিয়ায় চলে যায়। কিন্তু ভাগ্যের চাকা না খোলায় দেশে ফিরে ইউটিউব থেকে গাড়ির লক সিস্টেম খোলার উপায় শিখে নেয় সহজেই।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালেও শুরুতে সে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় ইউটিউব বিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে দামী মোটরসাইকেল চুরি করা শুরু করে। প্রথম কিছুদিন নির্ভিগ্নে চুরি করলেও পরে ঠিকই গ্রেফতার হয়। আগেও কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে জেল খাটে তরুণ।

সর্বশেষ ২০২১ সালে চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়লে দেড় বছর জেল খাটেন তিনি। গত জানুয়ারি মাসে জামিনে ছাড়া পেলেও শান্ত থাকেননি তিনি। আবারো জড়িয়ে পড়েন পুরনো পেশায়। গতকাল রাতে মিরপুরের রাইনখোলা বড় মসজিদের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চুরির সময় জনতা তাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তরুণ স্বীকার করে, ইউটিউব দেখে সে মোটরসাইকেল চুরি শিখেছে।"