১৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:৩৮

নিখোঁজের ৪ মাস পর কলেজছাত্রীর পরিবার পেল বেনামি চিঠি, কঙ্কাল উদ্ধার

  © সংগৃহীত

৪ মাস আগে নিখোঁজ হন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের লামিয়া আক্তার (১৮) নামের এক কলেজছাত্রী। গতকাল রবিবার রাতে তাঁর ঘরের সামনের সিঁড়িতে একটি বেনামি চিঠি পাওয়া যায়। এর সূত্র ধরে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের মোজাহার মোল্লার বাড়ির পাশের জমি খুঁড়ে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।

নিখোঁজ লামিয়া আক্তার চিথলিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে এবং স্থানীয় সরকারি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। কঙ্কালটি তার কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জানা গেছে, লামিয়া আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মো. তরিকুল ইসলামের (২২) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের ৩০ মে বিয়ের দাবিতে তরিকুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান নেন লামিয়া। এরপর স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় তাদের বিয়ে হয়। তবে তরিকুলের মা-বাবা এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় লামিয়া বাবার বাড়িতে চলে আসেন।

তরিকুল বিভিন্ন সময়ে লামিয়ার বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে লামিয়াকে নিয়ে বের হন তরিকুল। এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন এই কলেজছাত্রী। তরিকুল ইসলামের বাড়িসহ সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে মেয়ের খোঁজ করেন লামিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম।

গত ৭ ডিসেম্বর নিখোঁজ লামিয়া আক্তারের মা রাজিয়া বেগম স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হন, ঘটনার দিন রাতে তরিকুল ও লামিয়া একসঙ্গে ছিলেন। এরপর ২৫ ডিসেম্বর তরিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখসহ নয়জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অপহরণের মামলা করেন রাজিয়া বেগম।

ঘটনার ৪ মাস পর গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে লামিয়ার ঘরের চালে ও বেড়ায় ঢিল ছুড়ে মারা হয়। এতে তার পরিবারের লোকজন ভয় পেয়ে এক আত্মীয়কে ডাকেন। তিনি এসে ঘরে ঢোকার সময় সিঁড়ির ওপর মাটির চাকা দিয়ে চাপা দেওয়া কাগজ পান।

ওই কাগজে লেখা ছিল, তোমাদের মেয়ের লাশ মোজাহার মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশে বালুর মাঠের মধ্যে রাখা আছে। পরে রাতেই লামিয়ার পরিবার পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহারা বসায়। আজ সোমবার সকালে বালুর মাঠ খনন করে একটি কঙ্কাল পাওয়া যায়।

কঙ্কালটি লামিয়ার বলে দাবি করেন তার মা রাজিয়া বেগম বলেন, তরিকুল ইসলাম আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ বালুর মধ্যে চাপা দিয়ে রাখেন। বালুর মধ্যে পাওয়া কঙ্কাল আমার মেয়ের।

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কঙ্কালের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার পর লাশের পরিচয় জানা যাবে। এরপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।