২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:১৭

ধর্ষণ মামলায় সাবেক এমপি আরজু কারাগারে

ধর্ষণ মামলায় সাবেক এমপি আরজু কারাগারে  © সংগৃহীত

পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু ওরফে ফারুকে ধর্ষণ মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। নিজের নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে তালাকপ্রাপ্ত নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার ঘটনায় গত বছরের ২২ এপ্রিল মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল: ৫এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহারের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে, সোমবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫-এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির করেন। একইসঙ্গে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন পুলিশকে দাখিল করতে দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় বাদীর। এরপর তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করার সময় একা জীবনযাপন করছিলেন। তখন আত্মীয়-স্বজনরা তাকে আবারও বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এক পর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে বাদীর চাচার মাধ্যমে আসামির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে আসামি নিয়মিত বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাকে বিয়েতে রাজি করান। আসামি ওই নারীকে জানান, তার প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি তাদের একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আসামির আচার-আচরণে পরিবর্তন আসে। বাদীর নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার কথা বললে তার বাবা ১৮ লাখ টাকা এবং ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে আসামিকে টাকা দেন। কিন্তু তিনি কোনও ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি।

এক পর্যায়ে আসামি বাদীর বাসায় আসা বন্ধ করে দেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আসামির প্রথম স্ত্রী জীবিত। বর্তমানে ওই স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করছেন। আরও জানতে পারেন, বিবাদী এর আগে বাদীর কাছে নিজের নাম ফারুক হোসেন হিসেবে প্রচার করলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু। এরপর আসামি কয়েকবার নিজে ও ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে আসামি বাদীর সঙ্গে বিয়ে, ও সন্তানের পিতৃ-পরিচয় অস্বীকার করেন। তিনি মিথ্যা তথ্য ও পরিচয় দিয়ে বাদীকে ধর্ষণের উদ্দেশে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন।

এ ঘটনায় গত বছরের ২২ এপ্রিল আদালতে মামলাটি করা হয় এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মাধ্যমে। এরপর ট্রাইব্যুনাল বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দেন। অভিযোগ তদন্তের পর ঢাকা মহানগর উত্তর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম ট্রাইব্যুনালে গত ৫ জানুয়ারি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।