২০০ ভরি সোনা ডাকাতির ঘটনায় ছাত্রলীগের সেই সভাপতি বহিস্কার

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিক খান
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিক খান  © সংগৃহীত

ফরিদপুরের মধুখালীতে ব্যবসায়ীকে বাস থেকে নামিয়ে সোনা ডাকাতির মামলায় রিমান্ডে থাকা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তৌফিক খানকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সংগঠনের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থী ও অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তৌফিক খানকে (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বালিয়াকান্দি উপজেলা শাখা) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

তৌফিক খান বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের আবদুল মান্নান খানের ছেলে। আবদুল মান্নান খান উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে গত রোববার বিকেলে তৌহিদ খানকে বালিয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুরের মধুখালী থানার পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাঁকে ফরিদপুরের ৫ নম্বর আমলি আদালতে পাঠানো হয়। এরপর আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছার তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, গতকাল বিকেল থেকেই তৌফিককে  রিমান্ডে এনে জ্ঞিাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি ২০০ ভরি সোনা ডাকাতি, সোনার অবস্থান, এ ঘটনায় কারা কারা জড়িত ও তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে শুরু করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্য যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। বুধবার রিমান্ডের সময় শেষ হলে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। প্রয়োজন হলে নতুন করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাসেল মিয়া গত শুক্রবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় বাজারে যাওয়ার জন্য বরিশালগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে সোনার বারগুলো ছিল। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। সেখান থেকে খান পরিবহনের একটি বাসে করে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দেন।

বাসটি মধুখালী উপজেলার পশ্চিম আড়পাড়া এলাকার কামারখালী গড়াই সেতুর টোল প্লাজায় পৌঁছালে আট-নয়জন বাসের ভেতরে উঠে তাঁকে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে নিচে নামান। পরে আসামিরা তাঁকে সড়কের পাশে থাকা একটি করাতকলের মালিকের (জুয়েল খান) বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাঁর কাছে থাকা ২০টি সোনার বার (মোট ওজন ২ কেজি ৩৩২ গ্রাম) ছিনিয়ে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় রাসেল মিয়া শুক্রবার রাতে মধুখালী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনমা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে একটি ডাকাতির মামলা করেন। পুলিশ এর আগে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রইচ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। রইচ মোল্লা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ওই কমিটি বিলুপ্ত করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ ফোরাম বিচার-বিবেচনা করে এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা। তিনি বলেন, শুধু তৌফিক খানই নয় আরও কোনো দুষ্কৃতিকারী সংগঠনে থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ