বিয়েতে রাজি না হওয়ায় কনস্টেবলের বাসায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রেমিকার আত্মহত্যা
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ কনস্টেবলের বাসায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে। তরুণীর নাম লামিয়া আক্তার (২২)। পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ হোসেনকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন লামিয়া। বিষয়টি নিয়ে সোহাগের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোহাগের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তরুণী। লামিয়া ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ঘটনার পর থেকে সোহাগ পলাতক রয়েছেন।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে ১১টায় যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক লামিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত লামিয়া আক্তারের মা মঞ্জু বেগম বলেন, আমার মেয়ে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। তারা গ্রামে থাকেন। লামিয়া ধানমন্ডিতে থাকেন। চার বছর আগে লামিয়া গাজীপুরে লেখাপড়া করার সময় সেখানে সোহাগের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। সে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে করবে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে ও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা বলে।
পুলিশ সদস্য সোহাগের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলায়। তার স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি বিয়ে দাবি করে আসছিল লামিয়া। গত ৯ ফেব্রুয়ারি লামিয়া মাতুয়াইলে পুলিশ সদস্য সোহাগের বাসায় গিয়ে ঘুমের ওষুধ সেবন করে। তখন সোহাগই তাকে হাসপাতাল থেকে স্টোম্যাক ওয়াশ করিয়ে মুন্সিগঞ্জে লামিয়ার নানা বাড়িতে রেখে আসেন।
এই খবর শুনে ছোট মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর থেকে মুন্সিগঞ্জে মেয়ের কাছে যান। সেখান থেকে লামিয়ার দাবির প্রেক্ষিতে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) মুন্সিগঞ্জ থেকে মাতুয়াইলে সোহাগের বাসায় আসেন তারা। আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি) সেখান থেকে গাজীপুর চলে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। তবে সকালে সোহাগ কর্মস্থলে চলে যাবার পর ফোনে তার সঙ্গে লামিয়ার রাগারাগি হয়। এক পর্যায়ে লামিয়া রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। তখন অনেক ডাকাডাকি করলেও তিনি দরজা খোলেননি। অনেকক্ষণ ধাক্কাতে থাকলে একসময় দরজা খুলে যায়। তখন তারা দেখতে পান ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন লামিয়া। সঙ্গে সঙ্গে ঝুলন্ত লামিয়াকে নিচে নামানো হয়। এরপর সোহাগকে খবর দিলে তিনি এসে তাকে ঢামেকে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: আবারও প্রেমিকাকে হত্যা করে ফ্রিজে রাখলেন প্রেমিক
তিনি আরও বলেন, সোহাগের আগে বিয়ে হওয়ায় আমরা প্রথমে রাজি হইনি। পরে মেয়ের কথা চিন্তা করে আমরা তার সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হই। কিন্তু সে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায়নি। আমি আমার মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই। আমার স্বামী ইরাকে থাকে। আমার দুই মেয়ের মধ্যে লামিয়া বড় ছিল। আমাদের বাড়ি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার চরগাঁও এলাকায়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, মাতুয়াইল এলাকা হতে এক তরুণীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।