কলেজে শিক্ষককে পিটিয়ে বদলির হুমকি ছাত্রলীগ নেতার
পরীক্ষার হলে দেখে লিখতে নিষেধ করেছিলেন এক শিক্ষক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। শিক্ষককে পিটিয়ে বদলি করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামে সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে। এর কোনো প্রতিকার না পেয়ে কলেজের এক শিক্ষক নেতা তাঁর পদত্যাগের আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটান। এদিন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মুজাহিদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন তিনি। চার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হয়। শিক্ষকসহ সংশ্নিষ্টরা জানান, পরীক্ষায় এক ছাত্রের খাতা দেখে লিখছিলেন নাঈম। এ সময় নিষেধ করেন মুজাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এভাবে দেখে লেখার সুযোগ নেই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন ও পিটিয়ে বদলি করার হুমকি দেন নাঈম। এ ঘটনায় শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবীর দাশ প্রতিবাদ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে রোববার কলেজের অধ্যক্ষসহ সংশ্নিষ্টদের নিয়ে জরুরি সভা করলেওব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে পদ ছাড়ছেন সুবীর দাশ। তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, দোষী শিক্ষার্থীরা সবার সামনে ক্ষমা চেয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্র শিক্ষকের পা ছুঁয়েও ক্ষমা চায়। শিক্ষকও সবার সামনে মাফ করে দেন। এ ব্যাপারে কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই বলে তিনি স্টেটমেন্টও দিয়েছেন।’
শিক্ষক নেতার পদত্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, আগে থেকেই ওই শিক্ষক পারিবারিক সমস্যা ও অসুস্থতার কথা বলে আসছিলেন। এ কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষক লাঞ্ছিত করার ঘটনার এর সম্পৃক্ততা নেই।
শিক্ষক মুজাহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় নাঈম বলে, ‘আপনি দেখে লিখতে দেবেন কিনা?’ ‘আপনাকে মেরে কলেজ থেকে ট্রান্সফার করব।’ আরও কিছু অশালীন কথা বলেন নাঈম। সুবীর দাশ এ বিষয়ে নাঈমের কাছে জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন করেন- ‘আপনি কে? কেন কৈফিয়ত দিতে যাব? অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।’
সুবীর দাশ বলেন, ‘শিক্ষক মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে অন্যায় হওয়ায় প্রতিকার চেয়েছেন। কিছুই করতে পারেননি। অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। তবে এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা কাজী নাঈমের বক্তব্য জানা যায়নি।