মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের লাঠির আঘাতে ছেলের মৃত্যু
মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের লাঠির আঘাতে তাহসিন (১০) নামের এক স্কুলছাত্র খুন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এরআগে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাহসিনকে মারধরের ঘটনা ঘটে। তাহসিন বগুড়া শহরের গোদরপাড়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। বগুড়া উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সুজন মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত তাহসিনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রায় একযুগ আগে দুপচাঁচিয়ার তাসলিমা বেগমকে তিনি বিয়ে করেন। তাদের সংসারে তাহসিনসহ তিন সন্তান আছে। প্রায় বছর তিনেক আগে প্রতিবেশী আমিনুরের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় সালিশ বসিয়েও বিষয়টির মীমাংসা করা যায়নি। একপর্যায়ে কুদ্দুস এক বছর তিনমাস আগে তার স্ত্রী তাসলিমাকে তালাক দেন। এরপর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে কুদ্দুস নিজে বাড়িতে ও তাসলিমা তার বাবার বাড়িতে থাকতেন।
মঙ্গলবার সকালে তাসলিমা তার সন্তানদের দেখতে গোদারপাড়ায় কুদ্দুসের বাড়িতে আসেন। সকাল ৭টার দিকে কুদ্দুসের মা কুলসুম বেগম বাড়ি থেকে তাকে বের করে দেন। এসময় আমিনুর ও তার স্ত্রী শোভা তাসলিমাকে দেখতে পেয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে কুদ্দুসের মা কুলসুমকে মারধর শুরু করেন। টের পেয়ে কুদ্দুস তার মাকে উদ্ধার করতে গেলে আমিনুর ও শোভা তার আত্মীয়-স্বজনদের ডাক দেন।
পরে ৮-১০ জন মিলে আমিনুর ও শোভার পক্ষ নিয়ে কুদ্দুস ও তার মা কুলসুমকে মারধর করতে থাকেন। এরমধ্যে কুদ্দুসের মেজ ছেলে তাহসিন সেখানে এলে আমিনুর লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাহসিনকে উদ্ধার করে তার বাবা কুদ্দুস শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমিনুর নিজে বাঁশ দিয়ে আমার ছেলের মাথায় আঘাত করে। আমার ছেলের মাথার মধ্যে বাঁশ ঢুকে ছিল। অনেক কষ্ট পেয়ে বাচ্চাটা আমার মারা গেলো।’
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আমিনুর পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। তাহসিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।